নাহিদা আক্তার পপি: আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনগণের পাশে আছে সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনগণের পাশে আছে সেনাবাহিনী ঢাকা চলমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
রোববার অন্ত:বাহিনী জনসংযোগ
পরিদপ্তর_আইএসপিআর এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। আইএসপিআর জানায়, দেশব্যাপী ক্রম অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে জনসাধারণের জানমাল ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানে গত ২০ জুলাই ভোর হতে নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দ্রুত নৈরাজ্য প্রশমন করতে সাহায্য করে। আইএসপিআর আরো জানায়, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়াসমূহে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য দেশে এবং বিদেশে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা বলে অনুমিত।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সংবিধান সমুন্নত রেখে প্রচলিত আইনের আওতায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, দেশবাসীর জানমালের নিরাপত্তা ও জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
স্বার্থান্বেষী মহলের এ জাতীয় বিভ্রান্তিকর তথ্য ও সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছে। জনগণের স্বার্থে ও রাষ্ট্রের যেকোন প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।
সহিংতায় ১৪৭ জনের মৃত্যু: নিহতদের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহিংতায় ১৪৭ জনের মৃত্যু: নিহতদের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা দেশে কোঠা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় সরকারিভাবে এ পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামা খান। গতকাল রোববার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে দেশ-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। কখনো বলা হচ্ছে ৫০০, কখনো বলা হচ্ছে এক হাজার।
সেজন্য সরকারের কাছে যে হিসাব ছিল সেটি দেওয়া হলো। বিভিন্ন হাসপাতাল, বিভিন্ন জেলা থেকে নিহতের এ সংখ্যা পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে পুলিশ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছে। আসাদুজ্জামান খান বলেন, মৃতের সংখ্যা নির্ণয়ে আরও অনুসন্ধান চলছে। নিহতদের মধ্যে কতজন নারী, কতজন পুরুষ কিংবা কোন পেশার মানুষ কতজন রয়েছে-সেটি নির্ধারণের কার্যক্রমও চলছে।
এই ধরনের হত্যাকাণ্ড, বর্বরোচিত আক্রমণ পৃথিবীর কোন সভ্য দেশ দেখেছে বলে আমার মনে হয় না। তারা একটা হাসপাতাল পর্যন্ত রেডি রেখেছে, কেউ ইট কিংবা লাঠির আঘাতে আহত হলে তাদের সেখানে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে আরেক দল এসেছে। আগে থেকে একটা পরিকল্পিতভাবে আক্রমণগুলো করেছে।
নিহতের সংখ্যা নিয়ে অনেকে বিভ্রান্তি হচ্ছে, অনেকে অনেক কিছু বলছেন। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সহিংস ঘটনায় নিহতদের তালিকা পাওয়া গেছে। এই তালিকা আরও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। আরও দু-একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলে তাদেরকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহিংস ঘটনায় নিহত পুলিশ সদস্যদের নিহত হওয়ার বিভষ্ম ছবি দেখান।
মন্ত্রী বলেন, হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশ যখন পেরে ওঠতে পারছিল না, তখন সেনাবাহিনীকে ডাকা হয় এবং দেশে কারফিউ জারি করা হয়। বর্তমানে দেশ ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। কারফিউ শিথিল করা হচ্ছে। পরিবেশ আরও স্বাভাবিক হলে কারফিউ তুলে দেওয়া হবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্লক রেইড দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, সেখানে শিশুদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শিশুদের গ্রেপ্তারের কথা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বলা হচ্ছে। এ কাজে (সহিংসতা) টাকার বিনিময়ে কিশোর গ্যাংদের কাজে লাগানো তথ্য আছে। দোষী ব্যক্তিদের অবশ্যই শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সেক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
পুলিশকে পৈশাচিকভাবে মেরেছে। একইভাবে দেখা গেছে আত্মসমর্পণের পরও পুলিশ গুলি করেছে। দেখেছি গাড়ি থেকে লাশ টেনে হিঁচড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে-এ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে,তাদের অযথা গুলির করার দরকার হয় না। প্রতিটি গুলির হিসাব তাদেরকে দিতে হয়। প্রতিটি মৃত্যুর জবাবদিহি তাদেরকে করতে হয়। পুলিশ অযথা গুলি করেছে, শিশুকে মেরে ফেলেছে। এগুলো সম্পূর্ণই গুজব, অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
দেশব্যাপী গণগ্রেপ্তারের নির্দোষ মানুষকেও হয়রানি করা হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিনা কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। গোয়েন্দা বাহিনী পুলিশকে তালিকা করে দিয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রত্যেকটি গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে কীনা? জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই মুহুর্তে তা বলা যাচ্ছে না। তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে আহত কেউ মারা গেলে তালিকায় যুক্ত হবে।
মৃত্যুর তালিকায় কতজন ছাত্র ও কতজর পুলিশ ও অন্যান্যরা রয়েছে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে নিহতদের সম্পর্কে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। তালিকা হাতে পাওয়া গেছে। তাদের সম্পর্কে তথ্য-যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুরুতে দেশব্যাপী বিভিন্ন সরকারী স্থাপনায় হামলার বিসয়ে তুলে ধরে বলেন, তারা বর্বরোচিতভাবে সরকারী স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। তারা মাইকে ডেকে পুলিশকে টার্গেট করে আক্রমণ করেছে। এই আক্রমণ থেকে সাংবাদিকেরাও হেরাই পাননি। নারায়ণগঞ্জে একজন নারী সাংবাদিককে পৈশাচিক উপায়ে আক্রমণ করা হয়েছে।
Leave a Reply