নাহিদা আক্তার পপি বিশেষ প্রতিনিধিঃ রাজধানীর উত্তরা ও তুরাগে ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) খসরু চৌধুরী ও তার ছোট ভাই অশ্রু চৌধুরীর নাম ভাঙ্গিয়ে উত্তরা- তুরাগে একটি চাঁদাবাজ প্রভাবশালী চক্র চাঁদাবাজির মহোৎসব চালাচেছ বলে অভিযোগ উঠেছে। এক কথায় বলতে গেলে জোর যার মুল্লুক তার!
জানা গেছে, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে শুরু করে উত্তরার আব্দুল্লাহ মাছ বাজার, কাঁচাবাজার, কামারপাড়া, রোড, উত্তরখান, দক্ষিনখান, আজমপুর, খিলক্ষেত সহ আশপাশের এলাকা গুলো চাঁদাবাজদের হাতে জিম্বি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও লেগুনা গাড়ি গুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চাঁদাবাজরা রাতের অন্ধকারে অবৈধ পথে আয় রোজগার করছেন কোটি কোটি টাকা।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, তুরাগের ডিয়াবাড়ী রাইদা স্ট্যান্ড সংলগ্ন প্রায় শতাধিক (গাড়ি) বাস আছে। সেখান থেকে তুরাগের তারারটেক গ্রামের আব্দুল জব্বারের পুত্র রুবেল টাকা উঠায়। এছাড়া সে মাদক ব্যবসা ও কিশোর গ্যাং গ্রুপের সাথে জড়িত বলে স্হানীয় লোকজন জানিয়েছে। সূত্র বলছে, উত্তরা ১৫ নং সেক্টর ডিপিএস স্কুলের পাশে ৪০/৫০ টি লরি থাকে। এখানে দৈনিক ৩০০ টাকা হারে চাঁদা তোলা হয়। স্হানীয় চন্ডাল ভোগ গ্রামের কায়েস, সুজন, রুবেল গংরা ব্যাপক হারে মোটা অংকের টাকা চাঁদাবাজি করে। এছাড়া তুরাগের ১৮ নং সেক্টর পঞ্চবটি বাজার থানা রোড সংলগ্ন একটি অবৈধ মার্কেট গড়ে তোলা হয়েছে। তুরাগ থানা শ্রমিকলীগের সহসভাপতি পরিচয়ে জৈনক নাদিম এটি নিয়ন্ত্রণ করেন।
অপর দিকে, উত্তরা পশ্চিম থানা ৫১ নং ওয়ার্ড শ্রমিকলীগের সভাপতি কাইয়ুম বুলেট, মিরাজ ও মোস্তফা গংরা মিলে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে খালপাড়ে। সেক্টরের ভেরতে এবং রাস্তার পাশে ভ্যান গাড়ি থেকে টাকা উত্তোলন করছে। এ চাঁদাবাজ চক্রটি স্হানীয় এমপি, প্রশাসন ও দলের শীর্ষ পর্যায়ের নাম ভাঙ্গিয়ে দৈনিক প্রায় ৮/৯ দোকান টাকা চাঁদাবাজি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে মিরাজ ও মোস্তফার বিরুদ্ধ উত্তরা পশ্চিম ও তুরাগ থানায় চাঁদাবাজি সহ একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে। বর্তমানে তারা পলাতক রয়েছেন।
এলাকাবাসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর আছে তুরাগ থানা শ্রমিকলীগের ১ নং যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রুবেল চাঁদাবাজির অভিযোগে র্যাব এর হাতে আটক হয়। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মারামারির মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া তার সহযোগী নাদিম ২/৩ বছর আগে গ্যারেজ ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। ৫৩ নং ওয়ার্ড শ্রমিকলীগের সাবেক সভাপতি ছিল নাদিম।
এদিকে, উত্তরা পশ্চিম থানা ৫১ নং ওয়ার্ড শ্রমিকলীগের সভাপতি কাইয়ুম বুলেট এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি প্রশাসন থেকে শুরু করে দলীয় নেতাদের (সবাইকে) ম্যানেজ করে উত্তরার ৮/৯ শ ফুটপাতের দোকান থেকে টাকা উঠাই। এতে কারও কিছু বলার নেই। আমি এখন লাইন দেখাশোনা করি। আগে লাইন দেখাশোনা করতো মিরাজ ও মোস্তফা গংরা।
সাবেক লাইনম্যান মোস্তফা ও মিরাজ জানান, আমি এক সময় লাইন চালাতাম। এখন আমি কোন ধরনের টাকা পয়সা উঠাই না। আমাকে বুলেট গংরা খালপাড় থেকে বিতাড়িত করে তারা ফুটপাত দখন করে নিয়েছে। আমিসহ আমার লোকজনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম ও তুরাগ থানায় মামলা দিয়ে হয়রানী করছে বলে জানান তিনি।
ফুটপাতের টাকা তোমার বিষয়ে রুবেল জানান, আমি কোন চাঁদাবাজির সাথে জড়িত নই। টাকা উঠায় শফিক ও ফরহাত গংরা। এই চক্রটি এখন মাঠে আছে।
এবিষয়ে শফিক জানান, আমি কোন চাঁদাবাজির সাথে জড়ি নই। আমি রাজনীতির সাথে জড়িত। একটি চক্র আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। ইতিপূর্বে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে র্যাবের হাতে আটক হয়েছিল রুবেল। তার নামে মামলা রয়েছে।
এদিকে, ঢাকা-১৮ আসনের এমপি আলহাজ্ব মো: খসরু চৌধুরী বিভিন্ন জন সভায় চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমার নাম, আমার পরিবারের কারও নাম এবং দলের নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ চাঁদাবাজি করে এবং এর সঠিক প্রমান পাওয়া যায় তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে এসব চাঁদাবাজ বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার, উত্তরা বিভাগের ডিসি, গোয়েন্দা পুলিশ ডিবিসহ সংশ্লিষ্টদের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসি।
Leave a Reply