চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া বাজারে ৯ জুলাই দুপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঘোষিত ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির সূচনায় ঘটে যায় এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য। কেন্দ্রীয় নেতাদের শুভেচ্ছা জানাতে আশপাশের বিভিন্ন স্কুলের ইউনিফর্ম পরা শিক্ষার্থীরা এসে দাঁড়ায় সড়কের পাশে। নেতাদের সঙ্গে করমর্দনের জন্য এগিয়ে এলে এনসিপির কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম হঠাৎ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমাদের এখন স্কুলে থাকার কথা, ক্লাস ফেলে এখানে চলে আসা একদম ঠিক হয়নি। পড়াশোনা বাদ দিয়ে আমাদের দেখতে আসা তোমাদের কাজ না।” তবে কিছুক্ষণ পর তাঁর কণ্ঠে আবেগ ঝরে পড়ে। এক পর্যায়ে সারজিস আলম বলেন, “তোমাদের এই ভালোবাসা দেখে হৃদয় কেঁপে উঠেছে। আমরা যেন এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারি—জীবন দিয়েও যদি লাগে, তা-ও দিতে প্রস্তুত। তোমরা মন দিয়ে পড়াশোনা করো। আমাদের চেয়েও বড় হও, দেশ গড়ায় নেতৃত্ব দাও।”
সারজিস আলমের এমন উভয়পন্থী বক্তব্যে উপস্থিত নেতাকর্মী ও পথচারীদের মধ্যে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অনেকেই বলেন, রাজনীতির ভেতরেও যে ভালোবাসা, স্নেহ ও দিকনির্দেশনা থাকতে পারে, সেটিই আজ চোখে দেখলাম। পরে হাটবোয়ালিয়ায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে গাড়িতে বসেই সংক্ষিপ্ত মতবিনিময়ের মাধ্যমে ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
এতে উপস্থিত ছিলেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, কেন্দ্রীয় নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলার সদস্য সচিব সাফফাতুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
পদযাত্রাটি হাটবোয়ালিয়া থেকে রওনা হয়ে আলমডাঙ্গা শহরে পথসভা শেষে, চুয়াডাঙ্গা শহরের শহীদ হাসান চত্বরে পথসভা করেন। এরপর দর্শনা ও জীবননগর হয়ে ঝিনাইদহ জেলায় চলে যায়।
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির মাধ্যমে তারা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের বার্তা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চায়। তাদের লক্ষ্য একটি মানবিক, বৈষম্যহীন ও জনমুখী রাষ্ট্র গঠন করা।