বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়ন ও ত্রিমাত্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে দেশিয় প্রযুক্তিতে নবনির্মিত তিনটি ডাইভিং বোট পানকৌড়ি, গাঙচিল এবং মাছরাঙা এর কমিশনিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৬ জুন সকালে খুলনা নেভাল বার্থে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান। অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান নতুন কমিশনিং হওয়া বোট সমুহের অধিনাকদের নিকট কমিশনিং ফরমান তুলে দেন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক নাম ফলক উন্মোচন করেন।অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান বলেন, প্রানপ্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ত্বরক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সর্বপরি ভু-রাজনৈতিক প্রয়োজনে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনীর ভুমিকা অনস্বীকার্য। বিশাল সমুদ্র অঞ্চলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে, যুদ্ধ ও শান্তিকালীন বিভিন্ন কর্মকান্ড এবং উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে চলেছে। ১৯৭১ সালের দেশ স্বাধীনতা লাভের পর একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে অল্পকিছু অকুতভয় নৌ সদস্যকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ একটি পুর্নাঙ্গ ও ত্রি মাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিনত হয়েছে তিনি বলেন বিশাল সমুদ্র এলাকার সার্বভোমত্ত্ব রক্ষা এবং ব্লু – ইকোনমি সংক্রান্ত কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে নৌবাহিনীর কর্মপরিধি ও দায়িত্ব বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের গন্ডিপেরিয়ে নৌবাহিনী আজ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছে। সম্পুর্ন দেশিয় প্রযুক্তিতে খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত তিনটি ডুবুরি জাহাজ নৌবাহিনীতে কমিশনিং করতে পেরে আমি আনন্দিত। উল্লেখ্য নিজস্ব সক্ষমতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আধুনিক যুদ্ধ জাহাজ নির্মান ও সরঞ্জামাদি তৈরির মাধ্যমে নৌবহরকে আরো শক্তিশালী করে তুলেছে। সেই ধারাবাহিকতায় গত ১০ জুন ২০২১ সালে খুলনা শিপইয়ার্ডে কিল লেয়িং এর মাধ্যমে দেশিয় প্রযুক্তিতে তিনটি ডাইভিং বোট নির্মান কাজ শুরু হয়। নির্মান কাজ ও প্রয়োজনীয় টেস্ট ট্রায়াল লোষ গত ৬ মে ২০২৫ খ্রীস্টাব্দে ডাইভিং বোটগুলো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিকট হস্তান্তর করা হয়। বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে নবসংযোজিত ডাইভিং বোট গুলোর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৪৮.৯০ মিটার এবং প্রস্থ ৯ মিটার। বোটগুলো ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। ডুবুরি কার্যক্রমের আধুনিকায়নে বোট তিনটিতে সংযুক্ত করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ডাইভিং কার্যক্রমে ব্যবহ্নত আধুনিক সরঞ্জাম ও সেন্সরে সুসজ্জিত এই বোট গুলোর মাধ্যমে নৌবাহিনীর ডুবুরিরা আরো কার্যকর ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। এছাড়াও প্রতিটি বোটে রয়েছে ১২.৭ মি: মি: হেভি মেশিন গান, উন্নত সার্ভেইল্যান্স র্যাডার, জিপিএস, ইকো- সাউন্ডার এবং আধুনিক কন্ট্রোল সিস্টেম। কমিশনকৃত ডাইভিং বোটগুলো শান্তিকালীন সামুদ্রিক নিরাপত্তা প্রদান সহ ডাইভিং অপারেশন, দুর্যোগ ও ত্রান শৃঙ্খলা সহ বিভিন্ন কনস্টুবুলারি দায়িত্ব পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে খুলনা নৌঅঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেক সহ সামরিক ও বেসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাজের কর্মকর্তা, নাবিক এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।