বাংলাদেশি পাইলট ক্যাপ্টেন এনামুল হক তালুকদার মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে মিসাইল হামলার এক ভয়াবহ মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন। ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের মাঝে পারস্য উপসাগরের উপরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট পরিচালনার সময় এই ঘটনা ঘটে।
১৪ জুন রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিয়াদের উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন শুরু করে তারা। ককপিটে ছিলেন ক্যাপ্টেন এনামুল হক ও কো-পাইলট রাফসান রিয়াদ।
ক্যাপ্টেন জানান, বাহরাইনের আকাশসীমা পেরিয়ে তারা ৪০,০০০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছালে আকাশে হঠাৎ এক অদ্ভুত দৃশ্য চোখে পড়ে। ইরানের আকাশে একের পর এক দ্রুত গতির ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যাচ্ছিল। প্রথমে এটা সামরিক মহড়ার অংশ মনে হলেও শিগগিরই তারা বুঝতে পারলেন এটি বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতি।
“আমাদের বিমানের খুব কাছ দিয়ে জ্বলন্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছুটে যাচ্ছিল, যা আমাদের পুরোপুরি আতঙ্কিত করেছিল,” বলেন ক্যাপ্টেন এনামুল। দ্রুত বিমানের রুট পরিবর্তন করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা হয় এবং অবশেষে রিয়াদে নিরাপদে অবতরণ করতে সক্ষম হন তারা।
পাইলটের ভাষ্যে, এই ঘটনা ছিল শুধু একটি সামরিক হামলা নয়, বরং এটি ছিল ভবিষ্যতের সংকেত, যা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাকে গভীর সংকটে ফেলেছে। তিনি যোগ করেন, “আমরা ইতিহাসের এক সাক্ষী, যেখান থেকে শুরু হতে পারে একটি বড় সংঘাত।”
নিরাপদ অবতরণের পর ক্যাপ্টেন এনামুল সংবাদে দেখেন, ইরান ইসরায়েলের উপর বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যা যুদ্ধের সূচনা বলে মনে হচ্ছিল।
মধ্যপ্রাচ্যের আকাশসীমা এখন আর শুধুমাত্র একটি ট্রানজিট করিডোর নয়, বরং একটি বিতর্কিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা শোনানোর মাধ্যমে ক্যাপ্টেন এনামুল প্রশ্ন উত্থাপন করেন, “আমরা যে আকাশে উড়ি, তা কি সত্যিই নিরাপদ?”