প্রতিবেদক: মনির হোসেন ,সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের পালপাড়া মৌজায় কালীগঙ্গা নদীর পূর্ব তীর কেটে অবাধে মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় একটি চক্র। চক্রটির মূলহোতা ইসলামপুর গ্রামের মোহসীন জিন্নাহর পুত্র সুমন মিয়া (৩৫)। দীর্ঘদিন ধরে দিনে-রাতে শত শত ট্রাকে মাটি লুট হলেও স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
প্রশাসনের নীরবতা ও স্থানীয়দের উদ্বেগ
স্থানীয়দের অভিযোগ, কালীগঙ্গা নদীর ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েকটি স্থানে শত কোটি টাকা ব্যয়ে তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে। তবে, যেই স্থান থেকে নদী তীরের মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে, তার পশ্চিম পাড়েই এই তীর সংরক্ষণ বাঁধের কাজ চলছে।
ইসলামপুর গ্রামের কামাল হোসেন, আমান বিশ্বাস, এমদাদুল ও মুরাদ হোসেনসহ একাধিক গ্রামবাসী জানান, সুমন ও তার সহযোগী রায়হান, ওয়াহিদ, মাহবুব এবং ইমন প্রায় দুই মাস ধরে পালপাড়া মৌজার আরএস ৩৯৯৮ দাগের খাস জমিসহ তীরভূমি কেটে লক্ষ লক্ষ টাকার মাটি বিক্রি করছে। স্থানীয়রা গত ১৫ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত মাটি কাটা বন্ধ বা জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিপদের আশঙ্কা
স্থানীয়দের আশঙ্কা, বর্ষা মৌসুমে অব্যাহত মাটি কাটার কারণে ভাঙনের কবলে পড়তে পারে কালীগঙ্গা নদীর ওই অংশ। এতে নবাবগঞ্জ উপজেলার কুন্ডা মৌজার সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রায় ৫০০ পরিবারের আবাসন হুমকির মুখে পড়তে পারে।
অভিযুক্তদের বক্তব্য
অভিযুক্ত সুমনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার সহযোগী রায়হান বলেন, “আমি মাটি কাটার সাথে জড়িত নই। সুমন ভাইয়ের কাছ থেকে মাটি কিনে অন্যত্র বিক্রি করি।”
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
চান্দহর ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খান মাটি কাটার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “এসিল্যান্ড স্যারকে বিষয়টি জানিয়েছি।”
জেলা প্রশাসক ড. মনেয়ার হোসেন মোল্লা জানান, “সিংগাইরের ইউএনও’র সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, কালীগঙ্গা নদীর তীর কেটে মাটি বিক্রির অবৈধ কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
Leave a Reply