নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : সিলেট অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েও খুব বেশি সুফল মিলছে না; বরং অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করলেও সেগুলো আবার চালু হয়ে গেছে। সিলেটে চালু অর্ধেকের বেশি ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই, চলছে ইটভাটা আইন অমান্য করে।
চলতি সপ্তাহে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, গত চার বছরে অনেক অবৈধ ইটভাটা বেড়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে অনেক অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করলেও সেগুলোর আবার চালু হয়ে গেছে।
অবশ্য বেসরকারি পর্যবেক্ষণ বলছে, দেশের বেশির ভাগ ইটভাটা নিয়মবহির্ভূতভাবে চলছে। এসব ইটভাটার কারণে ঘটছে বায়ুদূষণ। গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত বায়ুর মানের দিক থেকে সিলেটের অবস্থান ছিল শীর্ষ চারের মধ্যে।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ২০১০ ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৩-এ বলা হয়েছে, বসতি এলাকা, পাহাড়, বন ও জলাভূমির এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা করা যাবে না। কৃষিজমিতেও ইটভাটা অবৈধ। অথচ দেশের প্রায় শতভাগ ইটভাটা এই আইন মানছে না। খমতার দাপটে চালিয়ে যাচ্ছে, ঢাকা ব্রিকস ও দক্ষিণ সুরমা মেসার্স আজমল ব্রিকস নামের ইট ভাটা গুলো মানছেন না কোন আইন। ঢাকা ব্রিকস ও মেসার্স আজমল ব্রিকস নামে এই দুই ইট ভাটার মালিক পক্ষের সাথে দৈনিক ঘোষণা পত্রিকা কথা বলতে চাইলে ঢাকা ব্রিকস পরিচালক মহিউদ্দিন সাহেব বলেন, আমাদের এসব বলে লাভ নেই এরকম অনেক ইট ভাটা আছে অবৈধ ভাবে চলছে তারা যদি চালাতে আমরা কেন পারব না। আগে তাদের বন্ধ করা হউক পরে আমরা দেখব। মেসার্স আজমল ব্রিকস এর পরিচালক আজমল সাহেব বলেন, বিগত পঁচিশ বছর ধরে এই ইট ভাটার ব্যাবসা করে আসছি এখন পযর্ন্ত কেউ বন্ধ করতে পারেনি আর পারবেও না। যদি কেউ বন্ধ করতে আসে তবে তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে মোট ৭ হাজার ৮৬টি ইটভাটা চালু আছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০৫ ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। এসব ইটভাটায় বছরে প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ ইট তৈরি হচ্ছে। এসব ইটভাটার বছরে ১৩ কোটি মেট্রিক টন মাটি লাগে। মূলত কৃষিজমির ওপরের উর্বর অংশ কেটে ইট তৈরি করা হচ্ছে।
দৈনিক ঘোষণা পত্রিকা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ইটভাটা শুধু উর্বর মাটি ধ্বংস করছে না; বায়ু, মাটি ও প্রকৃতির স্থায়ী ক্ষতি করছে। স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালীদের মালিকানা ও ছত্রচ্ছায়ায় এসব ইটভাটা চলছে। স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠানের অন্যতম উৎস এলআর তহবিলের বড় উৎস এসব ইটভাটা। ফলে অবৈধ হলেও প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
অধিকাংশ ইটভাটার কারণে কৃষিজমির ফসলের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি আশপাশের বাসিন্দাদের নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট অঞ্চলের উপ – পরিচালক জনাব বদরুল সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক ঘোষণা পত্রিকাকে বলেন, আমাদের অভিযান চলছে আমরা অতি শিঘ্রই এসম্ত অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ করে দিব।
Leave a Reply