নিজস্ব প্রতিবেদক: পতিত স্বৈরাচার হাসিনার আমলে সংগঠিত সকল গুম খুনের বিচারকেই এখন সরকারের প্রধান প্রায়োরিটি হতে হবে। আমরা অতিদ্রুত বিচার দাবি করছি, তবে দ্রুততা যেমন জরুরি তেমনি যেন তেন বিচার করতে গিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ কাজের সুযোগ নাই। এখন ঘন ঘন নির্বাচনের কথা আসছে। গুম খুন ও গণহত্যার বিচার ব্যাতিত বাংলাদেশে কোন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবেনা বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সাবেক উপদেষ্টা ড. মোজাহেরুল হক।
আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভা এবং গণইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু’র সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাদাতুল্লাহ টুটুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিল মানবাধিকার সংগঠন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি। পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয় একাত্তর চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব:) দিদারুল আলম, জাতীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আব্বাস ইসলাম খান নোমান, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী চৌধুরী, যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য হাজরা মেহজাবিন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোজাহেরুল হক আরও বলেন, একটি দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না থাকলে রাষ্ট্র কার্যকর থাকেনা। ন্যায়বিচারের স্বার্থে সৎ বিচারকের খুবই প্রয়োজন। আগামী দিনে এবি পার্টি ক্ষমতায় আসলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে তারা ভুমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ। আগামীতে আমরা এবি পার্টি’র নেতাদের মতো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বকে ভোট দিয়ে সংসদে আনতে চাই।
যদি এবি পার্টিকে বিশ্বাস করেন তবে আগামীতে একটি ভালো সরকার আপনারা পেতে পারেন বলে দাবি করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা তুলি বলেন, বিগত ১.৫ যুগেরও বেশি সময় ধরে যে কষ্ট আমরা গুম পরিবারের সদস্যরা ভোগ করছি তা কল্পনাতীত । আমার ভাইকে এখনো ফিরে পাই নি, বিচারও পাইনি। আজকে মহান স্বাধীনতা দিবস, আরেকটা স্বাধীনতা আমরা আগষ্টে পেয়েছি। সব গুম খুনের বিচার স্বচ্ছতার সহিত করতে হবে। আমরা হাসিনার বিচার চাই। আওয়ামী লীগের মতো কাউকে আমরা ক্ষমতায় দেখতে চাইনা। আমরা আর কোনদিন হাসিনা রেজিমকে ফিরতে দিবোনা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, গত ১৬ বছরে কাউকে বাসা থেকে, কাউকে রাস্তা থেকে, অফিস থেকে গুম করে আয়নাঘরে বন্দী করা হয়েছিলো।
বিভিন্ন গোয়েন্দাসংস্থা ও আওয়ামীলীগের গুন্ডা পান্ডারা বাসা থেকে আমাদের নাগরিকদের তুলে নিয়ে যেত। অনেকের লাশটা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আমাদের সবার ইচ্ছে থাকে আমার আত্মীয়র, ভাইয়ের কবর জিয়ারত করবো, কিন্তু হাসিনা সরকার সেই সুযোগটুকুও রাখেনি। ভালোবাসার মানুষটা বেঁচে আছে না মরে গেছে, এটা না জানা কতো কষ্টের সেটি শুধু মাত্র ভুক্তভোগীই অনুধাবন করতে পারবে।
গুমের সাথে জড়িত অনেকে এখনো বহাল তবিয়তে আছে, এখনো তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয় নাই, যা খুবই দূর্ভাগ্যজনক।
বাংলাদেশ ২ এর রাজনীতি সকলকে ফিরে নিয়ে আসার রাজনীতি, এখানে কাউকে গুম খুন হতে হবে না। সকল গুম খুনের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন,
আমরা পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান একটা দেশ ছিলাম।পশ্চিম পাকিস্তান আমাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে, বৈষম্য করেছে, যার ফলশ্রুতিতে মুক্তিযুদ্ধ অপরিহার্য হয়ে পরেছিলো। ৭১ এ আমাদের বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়, ২৪ ঘটেছে ৭১ এর স্বপ্ন বাস্তবায়িত না হওয়ার জন্য। ৭১আমাদের অস্তিত্ব ২৪ আমাদের অনুপ্রেরণা।
অনেকে ৭১ আর ২৪ কে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ৭১ কে রক্ষা করতেই ২৪ এর সৃষ্টি হয়েছে।
যে প্রত্যাশা নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিলো সে স্বপ্ন পূরন না হওয়াতেই ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান অপরিহার্য হয়ে পরে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলচনা ও গণইফতারে এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ মামুন রানা , ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হালিম খোকন, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমদ, সফিউল বাসার, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহ সম্পাদক সুলতানা রাজিয়া, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সহ সম্পাদক মাসুদ জমাদ্দার রানা, সহঃ কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, সহঃ দপ্তর সম্পাদক এ্যাডভোকেট শরন চৌধুরী, সহঃ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান ব্যাপারী, সহ অর্থ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, নারী উন্নয়ন বিষয়ক সহ সম্পাদক শাহিনুর আক্তার শিলা, পল্টন থানা আহবায়ক আবদুল কাদের মুন্সী, যুব পার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ রাসেল, যুবপার্টি মহানগর দক্ষিনের আহবায়ক মাহমুদ আজাদ সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply