মোঃ রিয়াজুল ইসলাম: বর্তমানে ইসিবি চত্বর ঢাকার মিরপুরের একটি বহুল আলোচিত জায়গার নাম। যেখানে বিমান বাহিনীর অফিস এবং নামকরা ক্যান্টনম্যান্ট স্কুল এবং কলেজ রয়েছে। জায়গাটা ক্যান্টনম্যান্ট এর মধ্যে সেহেতু এখানকার রাস্তাঘাট গুলো অবশ্যই সুন্দর হওয়া উচিৎ। অবশ্য খুবি ভালো রাস্তাঘাটের অবস্থা ইসিবি পরযন্ত। এখন কথা হল ইসিবি থেকে বাউনিয়া হয়ে জসিম উদ্দিন পাকার মাথার রাস্তার কথা। যেখানে গাঘেঁষা রয়েছে বিমান বাহিনীর দেয়াল। ওখানে আবার নতুন করে কিছু দোকান ও করা হয়েছে, যাতে আরও ঝামেলায় পরতে হয়েছে এলাকাবাসিকে। এই রোডের প্রধান বাহন এই এটোরিকসা । রাস্তা এতো চিকন যে এই রাস্তায় একসাথে দুটি অটো যাতায়াত করতেই করাই খুব কষ্টকর । অটোরিকশা আবার সরকারি ভাবে অবৈধ করার কথা চলছে। অথচ অনায়াসেই বিমান বাহিনীর অফিসের সামনেই অবাধে চলছে এগুলো। এলাকায় অনেক নতুন বিল্ডিং হচ্ছে, যার কারনে যদি কোন কাভার ভ্যান বা ছোট ট্রাক ঢুকে যায় এই রাস্তায় তাহলেতো অটোর যাত্রিদের ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামে বসে থাকতে হয়। অথচ এই রাস্তাটিই ইসিবি থেকে বাউনিয়া হয়ে জসিম উদ্দিন পাকার মাথা পরযন্ত এলাকা বাসির প্রধান চলাচলের রাস্তা, দুঃখিত প্রধান অটো রিকশা চলাচলের রাস্তা। কারন এই পথে হাঁটা কঠিন। যে কোন সময় অটোরিকশার সাথে লেগে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। রাস্তাটির আয়তন বেশি হলে ৮-১০ ফিট হবে, কোথাও আরও কম। অনেক মেয়র ও জনপ্রতিনিধি চেন্জ হয়েছে, সবাই কথা দিয়েছিল এই রাস্তা ৬০ ফিট হবে, কেউ বলেছিলেন ৩০-৪০ ফিট হবে। কথা দেওয়া তাদের অনেকে দুনিয়া থেকে চলে গেছেন, অনেকে আবার খমতা হারিয়ে বসে আছেন । কোন অজানা কারনে রাস্তাটি বড় করা যাচ্ছে না। এই এলাকাটিতে বেশির ভাগি বড় বড় বিল্ডিং এবং জনবসতিও অনেক বেশি। কোন অসুস্থ রোগিকে এম্বুলেন্সের জন্য ডাকলে এম্বুলেন্স আসতে কতখন লাগবে কে জানে । রোডের বেহাল অবস্থা সবার জানা, তাই সহজে কেই আসতে চায় না। তাই অটোতেই এই এলাকায় বাসিন্দারা রোগি হাসপাতালে নিয়ে যান এই ভংগুর রাস্তায় । জ্যামে পড়ে অনেক রোগি মারা যাওয়ার ঘটনার কথাও অনেকে বলেছেন। গর্ভবতী মহিলাদের তাহলে কি অবস্থা? একটু ভাবুন। কোন মন্ত্রী/এম পি/আমলাদের রোড কি কখনে এরকম থাকতো? উনারা কি অন্য দেশের জনগন? বাইরের দেশ থেকে আমাদের দেশ চালায়? যদিও এই এলাকায় বিমান বাহিনীর অনেক সদস্যদের ফ্ল্যাটও আছে আবার অনেকে ভাড়ায় থাকেন। তারাও এটা নীরবে সয়ে যাচ্ছেন। এক বৃদ্ধ লোককে জিজ্ঞেস করলে উনি বল্লেন, উনার বাবাকেও উনি জিজ্ঞেস করেছিলেন, এই রাস্তা কবে বড় হবে? উনার বাবা এখন বেঁচে নেই। রাস্তা একই আছে। এখন উনার ছেলেমেয়েরা উনাকে জিজ্ঞেস করেন, উনি তাদের গভীর গলায় বলেন আমি মরলে হয়ত হইতে পারে, মরি না তাই মনে হয় সরকার করেনা। আবার এজকন একটু হেঁসে বললেন, অটোরিকশা তো আছেই, রাস্তার যে অবস্থা এই এলাকায় কারনে এই এলাকার বাসিন্দাদের
হাড়ে সমস্যা নেই। হাড় ভাংলে বা মচজালে মাত্র
১০ টাকা দিয়ে অটোরিকশায় উঠলে অটোরিকসা রাস্তার খাদে পড়ে আবার উঠে এভাবেই হাড় জোড়া লেগে যায়। উনি হেঁসে বললেও এগুলো সবি দু:খের/খোবের কথা। এটা আমাদের জন্য জাতি হিসেবে খুবই লজ্জার। একটা মাত্র রাস্তা তাও আবার ঢাকার প্রাণ কেন্দ্রে। এখনও এখানে অবৈধ অটোরিকশা প্রধান বাহন এখানে। চলাচল করে আবার বিমান বাহিনীর অফিসের সামনে বা পাশ দিয়েই। কেনই বা চলবে না এখানে রাস্তা এতো চিকন অন্য কোন যানবাহন এখানে চলা সম্ভব হবে না। কেউ একজন বলছিলেন রোড বড় করতে হলে আগের সরকারের কোন আত্নীয়ের বাড়ি ভাংতে হতো, তাই তখন রোড় বড়ো করা যায়নি। এতো বড় বড় স্হাপনা ভেংগে সরকার কতো রোড বের করল। এখানে আবার কোন সরকার এর আত্নীয়ের বাড়ি, কেউ ভয়ে নামটি বলেননি। আসলে আমি নিজেই দ্বিধায় পরে গেছি যে, কোন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এই এলাকায় মানুষগুলোর বহু যুগের আবদার মিটবে। বৃদ্ধ লোকটিও তাঁর স্বপ্নের বড় রোডটি দেখে যেতে পারবেন। এখন তো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন হলো। ইসিবি চত্বরে ও অনেক সংগঠক আছেন। তারও অনেকে রক্ত ঝরিয়েছিল। শহিদও হয়েছেন। এখন উনারা অনিয়মের পরিবর্তন বা সংস্কার করছেন পুরো দেশ। দেখা যাক ইসিবি চত্বরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন ইসিবি থেকে বাউনিয়া হয়ে জসিম উদ্দিন পাকার মাথা পরযন্ত সংস্কার বা বাসিন্দাদের ৬০ ফিট রাস্তার বহু যুগের ছোট একটা দাবি পুরন করতে পারেন কিনা?
Leave a Reply