1. masudkhan89@yahoo.com : Ghoshana Desk :
  2. zunayedafif18@gmail.com : Mahir Al Mahbub : Mahir Al Mahbub
  3. masudkhan89@gmail.com : Masud Khan : Masud Khan
আমরা হারিয়ে যাচ্ছি প্রযু্ক্তির মাঝে - দৈনিক ঘোষণা
ব্রেকিং নিউজ :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম যাবে চীনের বাজারে, খুশি চাষিরা নওগাঁয় ১৭১৯ কেজি সরকারি চাল জব্দ অবৈধ অভিবাসন রোধ ও পুলিশের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে ইতালি- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নওগাঁয় সড়ক দূর্ঘটনায় দু’জন শিক্ষার্থী’র মৃত্যু পীরগঞ্জে রাস্তা সংস্কার কাজের ঠিকাদারী পেলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারী পলাতক আ’লীগ নেতা! কেসিসির নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে মঞ্জুর করা মামলার শুনানি ৪ মে। বাবা-মেয়েকে অপহরণ করে নির্যাতনের দায়ে চাচা-ভাতিজার বিরুদ্ধে মামলা, প্রাণনাশের হুমকিতে পরিবার পলাশ উপজেলা বিএনপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা না করতে পেরে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি মহল। শিশুদের সাথে সব সময় ইতিবাচক আচরন করতে হবে, কেএমপি পুলিশ কমিশনার। গফরগাঁওয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

আমরা হারিয়ে যাচ্ছি প্রযু্ক্তির মাঝে

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১০৭ দেখেছেন

লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্ : প্রযুক্তির অগ্রগতির বিপরীতে মানুষের জীবনে মানবিক সম্পর্কে এক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। একসময় যখন পরিবার, বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে সময় কাটানো ছিল জীবনের স্বাভাবিক প্রবাহ; আজ তা স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ভার্চুয়াল বাস্তবতায় ঢাকা পড়েছে। প্রযুক্তি মানুষকে কাছাকাছি এনেছে, কিন্তু একই সঙ্গে অন্তরের দূরত্ব বাড়িয়েছে।
প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় যে পরিবর্তনগুলো ঘটেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো সম্পর্কের সরলতা হারিয়ে যাওয়া। একসময় মানুষ সামনাসামনি দেখা করে, কথা বলে এবং সময় কাটিয়ে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করত। সম্পর্কের মধ্যে ছিল আন্তরিকতা ও আবেগের গভীরতা। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তি সেই সরলতাকে প্রতিস্থাপন করেছে বার্তা, ইমোজি বা ভিডিও কলের মাধ্যমে। আবেগের স্পর্শ ও পারস্পরিক বোঝাপড়া দিন দিন সীমিত হয়ে পড়ছে ভার্চুয়াল যোগাযোগের ফ্রেমে। এ পরিবর্তন সহজতার আড়ালে সম্পর্ককে যান্ত্রিক করে তুলছে, যেখানে মানসিক সংযোগের জায়গায় তৈরি হচ্ছে এক ধরনের ফাঁকা অনুভূতি। একসময় পরিবারের সবাই একত্রে বসে খাবার খেত, পারিবারিক গল্প শুনত এবং নিজেদের মধ্যে স্নেহ ও মমতার আদান-প্রদান করত। কিন্তু প্রযুক্তির প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরতা এ সংস্কৃতিকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা এখন এক ছাদের নিচে থেকেও একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন। টিভি, স্মার্টফোন এবং অনলাইন গেমস পারিবারিক মুহূর্তগুলোকে দখল করে নিয়েছে। এর ফলে পরিবারের ভেতর স্নেহ, মমতা এবং সহমর্মিতার মতো গুণাবলির চর্চা হ্রাস পাচ্ছে। প্রযুক্তি বন্ধুত্বের সম্পর্কেও প্রভাব ফেলেছে। আগেকার দিনে বন্ধুরা একত্রে আড্ডা দিত, খেলত, বা ভ্রমণে বের হতো। সেই আন্তরিক সম্পর্কগুলো আজ সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট, লাইক এবং চ্যাটে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। ভার্চুয়াল যোগাযোগের এ সহজলভ্যতা বন্ধুত্বের গভীরতা এবং আন্তরিকতাকে ক্রমশ কমিয়ে দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে এ কৃত্রিম যোগাযোগ মানুষকে একাকিত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
শিক্ষাক্ষেত্রেও এ প্রভাব স্পষ্ট। আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, যা জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়াকে সমৃদ্ধ করত। এখন অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম এবং ভার্চুয়াল ক্লাসরুম শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষকদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছে। এতে করে শিক্ষার মানবিক দিকটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা অনেক সময় অনুপ্রাণিত হতে পারছে না।
তবে প্রযুক্তির এই নেতিবাচক প্রভাব রোধে আমাদের সচেতনতা এবং দায়িত্বশীলতা অত্যন্ত জরুরি। প্রথমত, আমাদের জীবনে প্রযুক্তি এবং সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। প্রতিদিন একত্রে খাওয়া, গল্প করা, কিংবা কোনো সাধারণ কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে পারিবারিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়ার ভার্চুয়াল সম্পর্ক কখনোই সশরীরে সাক্ষাতের উষ্ণতা এবং আন্তরিকতার বিকল্প নয়। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। প্রযুক্তিকে আমরা কাজে লাগাতে পারি, কিন্তু তা যেন আমাদের সম্পর্কের প্রকৃত গুণগত মান কমিয়ে না দেয়।
তৃতীয়ত, আমাদের উচিত তরুণ প্রজন্মকে মানবিক সম্পর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষিত করা। তাদের শেখাতে হবে যে, প্রযুক্তি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও তা কখনোই মানবিক মূল্যবোধের স্থান নিতে পারে না। শিক্ষাব্যবস্থায় সম্পর্কের মূল্যবোধ এবং সহমর্মিতার চর্চা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। এভাবেই আমরা প্রযুক্তির ইতিবাচক দিকগুলো কাজে লাগিয়ে সম্পর্কের উষ্ণতা এবং মানবিকতাকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারব। মানবিক সম্পর্ক রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। প্রযুক্তি যতই আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠুক না কেন, প্রকৃত মানবিক সম্পর্কই জীবনের প্রকৃত রসদ। তাই মানবিক সম্পর্কের শিকড়কে শক্তিশালী করে আমরা আমাদের সমাজকে আরও সংবেদনশীল এবং মানবিক করে তুলতে পারি।
লেখকঃ কলামিস্ট ও সাংবাদিক

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

একই রকম সংবাদ
© সকল স্বত্ব দৈনিক ঘোষণা অনলাইন ভার্শন কর্তৃক সংরক্ষিত
Site Customized By NewsTech.Com