নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) সম্প্রতি কেলেঙ্কারির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সংস্থার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী জাকিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ বাণিজ্য ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে আরও তিন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিয়োগ ও কর্মকাণ্ডও এ অনুসন্ধানের আওতায় এসেছে।
দুদকের উপপরিচালক মো. সোহানুর রহমানের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি দল এরই মধ্যে নেসকোর কাছে বিপুলসংখ্যক নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী নিয়োগে অনিয়ম এবং বিভিন্ন ব্যয়ে অর্থের অপচয় বিষয়ে।
নেসকোর বিভিন্ন সূত্রের দাবি, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জাকিউল ইসলাম তার সময়ে একাধিক ‘সেট আপ’ নিয়োগ সম্পন্ন করেন। এক্ষেত্রে নিয়োগপ্রার্থীদের কাছ থেকে অস্বাভাবিক অর্থ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। ফলে মেধা ও নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রভাবশালী প্রার্থীরা সুযোগ পান।
দুদকের চিঠি অনুযায়ী, জাকিউল ইসলামের সময়ে নির্বাহী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ-প্রক্রিয়ার সব নথি, নিয়োগে উত্থাপিত অনিয়মের তদন্ত প্রতিবেদন, নিয়োগ বিধিমালা, ডিপিসি কমিটির সুপারিশ, পরিচালনা পর্ষদের একাধিক সভার কার্যবিবরণী চাওয়া হয়েছে।
শুধু নিয়োগ নয় তার সময়ে নেসকোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ ব্যয়, টিএ-ডিএ, শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন, সভা-সমাবেশ ও সিএসআর খাতে সোলার প্যানেল বসানোর ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দুদক।
তবে এ পর্যন্ত চাওয়া নথিপত্র নেসকো দুদকে জমা দিতে পারেনি। দায়িত্বপ্রাপ্ত এমডি অঞ্জনা খান মজলিশকে এ বিষয়ে ফোনে পাওয়া যায়নি। নেসকোর নির্বাহী পরিচালক (মানবসম্পদ) মো. সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, ১০ বছরের নথি খুঁজে বের করতে সময় লাগছে। আগামী সপ্তাহে জমা দেওয়া হবে।
নেসকোর ভেতরের কর্মকর্তারা বলছেন, জাকিউল ইসলামের সময়ে যে অনিয়ম হয়েছে, তার বোঝা এখনও প্রতিষ্ঠানকে টানতে হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন, শীর্ষ মহলের ছত্রছায়ায় থেকে সাবেক এমডি ‘দুর্নীতির অভয়ারণ্য’ গড়ে তুলেছিলেন।
এ বিষয়ে সাবেক এমডি জাকিউল ইসলামের মন্তব্য জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দুদকের একটি সূত্র বলছে, নথিপত্র ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।