নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনিরের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। বহিষ্কারের মাত্র একদিন পরই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন চিশতিয়া জানান, “আমরা ড. আব্দুল মঈন খানের আদর্শে রাজনীতি করি। দলের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত সময়োচিত এবং ন্যায়সংগত।” বহিষ্কার প্রত্যাহারের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসানুজ্জামান সরকার, পলাশ যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন ভূঁইয়া মিল্টনসহ আরও অনেক নেতৃবৃন্দ।
ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ আলম মোল্লা বলেন, “ঘটনার ভিডিও ফুটেজে মনিরুজ্জামান মনিরকে দেখা যায়নি এবং তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি ষড়যন্ত্রমূলক। দলীয়ভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে কেন্দ্রীয় নেতারা যথাযথ বিবেচনার পর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেন।”
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা যুবদলের সহ-দফতর সম্পাদক নাজমুল ইসলাম সুমন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মনিরুজ্জামান মনিরকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ড এবং সন্ত্রাসী ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। তাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই দুপুরে ডাঙ্গা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন কনফিডেন্স সিমেন্ট ঢাকা লিমিটেড কারখানায় নদীপথে দুইটি ট্রলারে করে আসা একটি সশস্ত্র দল শ্রমিকদের আবাসিক এলাকায় হামলা চালায়। হামলায় ৬টি কক্ষে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ল্যাপটপ, মোবাইল ও বিভিন্ন মালামাল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এতে অন্তত সাতজন শ্রমিক আহত হন।
এ ঘটনায় মনিরুজ্জামান মনিরকে প্রধান আসামি করে পলাশ থানায় চাঁদাবাজি ও সহিংসতার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। ৫ জুলাই রাতে শহরের ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এরপর ৮ জুলাই দুপুরে তাকে আদালতে তোলা হলে তার সমর্থনে শতাধিক নেতাকর্মী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নজরে এলে তারা তা পুনর্মূল্যায়ন করেন এবং বুধবার (৯ জুলাই) রাতে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানান।
নরসিংদী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান সরকার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “দলীয় তদন্তে মনিরের সম্পৃক্ততার সুস্পষ্ট প্রমাণ না থাকায় এবং স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ের অনুরোধে কেন্দ্রীয় নেতারা বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেন। প্রয়োজনে এ বিষয়ে আমরা প্রেস বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করবো।”