ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নে পৈত্রিক জমির গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়েছে, রাতের আঁধারে ৬টি ইউক্লিপটাস গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৯০ হাজার টাকা।
ভুক্তভোগী পরেশ চন্দ্র বর্মনের দাবি, তিনি রুহিয়া ইউনিয়নের মধুপুর (কুড়ালি পাড়া) গ্রামে তার পৈত্রিক ৩ শতক জমিতে ২০ বছর আগে ১৪টি ইউক্লিপটাস গাছ রোপণ করেছিলেন। ৬ জুলাই রবিবার দিবাগত রাতে সেই জমি থেকে ৬টি গাছ কেটে নেয়া হয়। গাছ চুরির ঘটনায় স্থানীয় ২০নং রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ওয়াদুতকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পরেশ চন্দ্র জানান, তদন্তের এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন, অভিযুক্ত ওয়াদুত সেই গাছগুলো কাঠ ব্যবসায়ী ইসলাম উদ্দিনের কাছে বিক্রি করতে গিয়ে বায়না বাবদ ৫০০০ টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু ইসলাম উদ্দিন পরবর্তীতে বুঝতে পারেন যে ওয়াদুত আসলে গাছের প্রকৃত মালিক নন। পরে তিনি টাকা ফেরত নিয়ে নেন। পরেশ চন্দ্র এই ঘটনায় ন্যায়বিচারের আশায় রুহিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, “আমার জমির গাছ আমি নিজে দেখেশুনে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ৭ জুলাই সকালে দেখি, ১৪টির মধ্যে ৬টি গাছ নেই। পরে অনেক খোঁজখবর করে জানতে পারি, কাঠ ব্যবসায়ী ইসলাম উদ্দিনের সঙ্গে বিবাদী ওয়াদুত ৫০০০ টাকার বায়নানামা করেছিলেন। তবে গাছ নিজের না হওয়ায় ইসলাম টাকা ফেরত নেন। তারপরই গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়।
যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত মো. ওয়াদুত বলেন, “আমি কোনো গাছ কাটিনি। সেনিহারী বাজারে আমার গোডাউনে কিছু গাছ ছিল সেগুলোর জন্যই বায়না নিয়েছিলাম। পরবর্তীতে যেহেতু সেই গাছ সরকারি জায়গায় ছিল, আমি বায়নার টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছি।
অন্যদিকে কাঠ ব্যবসায়ী ইসলাম উদ্দিন বলেন, “ওয়াদুত গাছ বিক্রি করতে এসেছিল। আমি বায়না বাবদ টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে বুঝতে পারি, গাছগুলো তার নয়। তাই টাকা ফেরত নিয়ে নিই। ২০নং রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি বিপ্লব ইসলাম বলেন, “ওয়াদুতের গাছ কাটার বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই শুনলাম। তদন্ত করে যদি অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয়, দলীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রুহিয়া থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম বলেন, “যদি ওয়াদুত সত্যিই এ ধরনের ঘটনায় জড়িত থাকে, তাহলে আমরা সংগঠনগতভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। সংগঠনের কেউ যদি অপরাধে জড়ায়, আমরা তাকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেই না। তবে বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে দেখা দরকার।” এই বিষয়ে রুহিয়া থানার এস আই সুলতান লিখিত অভিযোগ গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রুহিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রিপন বলেন, “যদি কেউ দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে এমন অন্যায় করে থাকে, তা আমরা কখনোই মেনে নেব না। তদন্তে প্রমাণ মিললে আমরা দলীয়ভাবেও কঠোর ব্যবস্থা নেব। বিএনপি কখনোই কোনো অপরাধীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না।”