প্রত্যাশার প্রহর যেন এক দীর্ঘ নদীর ধারা। সময় বয়ে চলে, কিন্তু অপেক্ষার মন থেমে থাকে সেই নির্দিষ্ট প্রান্তে—যেখানে দেখা হবে, কথা হবে, কিংবা কোনো কাঙ্ক্ষিত ঘটনার আবির্ভাব হবে।
“অপেক্ষায় কাটে দিন”—শুধু একটি বাক্য নয়, এটি হলো একটি অনুভব, একটি নিঃশব্দ আর্তনাদ। যাকে ভালোবাসি, যার কাছে হৃদয়টা দিয়ে রেখেছি, তার একটুখানি দেখা পাবার আশায় চলে এই অবিরাম প্রহর গোনা। প্রতিটি সকাল নতুন আশায়, প্রতিটি সন্ধ্যা নিরাশায় ভরে ওঠে।
মানুষ জীবনে অনেক কিছুর অপেক্ষায় থাকে—একটি চিঠির, একটি ফোনকলের, প্রিয় কারো ফিরে আসার, কিংবা সমাজ-রাষ্ট্রে ন্যায়বিচারের। কেউ প্রিয়জনের জন্য অপেক্ষা করে বারান্দায় দাঁড়িয়ে, কেউবা হাসপাতালের বারান্দায় প্রিয় মানুষের সুস্থতার জন্য এক একটি নিঃশ্বাস ধরে রাখে। আবার কেউ পথ চেয়ে থাকে একটি ভালো দিনের—যেখানে অন্যায় থাকবে না, দুর্নীতি থাকবে না, থাকবে না কোনো বৈষম্য।
এই অপেক্ষা শুধুই দুর্ভোগ নয়, এটি আমাদের জীবনের অংশ। অপেক্ষা মানুষকে ধৈর্য শেখায়, আশা শেখায়, প্রার্থনা শেখায়। যারা অপেক্ষা করতে জানে, তারাই জীবনের গভীরতাকে উপলব্ধি করতে পারে।
তবে এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার মাঝেও কিছু প্রশ্ন মাথায় ঘুরে: অপেক্ষা কি শুধু কষ্টের নাম? না কি এর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ভবিষ্যতের একটি নতুন আলো?
সত্যি বলতে, অপেক্ষা শুধু স্থবিরতা নয়, এটি ভবিষ্যতের সম্ভাবনার এক পরিণত পাঠ। সময় যখন ঠিক হবে, যখন প্রার্থনা পূর্ণতা পাবে, তখন অপেক্ষার সকল বেদনা সার্থকতায় রূপ নেবে।
শেষ কথাঃ আজ যে দিনগুলো অপেক্ষায় কাটছে, একদিন সে দিনগুলোই হয়ে উঠবে জীবনের গল্প। অপেক্ষার পথ ধরে হয়তো আসবে সুখ, শান্তি, কিংবা সেই কাঙ্ক্ষিত মানুষ—যার জন্য এতদিন ধরে হৃদয়ে বহন করে চলেছি এক নীরব ভালোবাসা।