রাজশাহী নগরীর আলোচিত ও বিতর্কিত চরিত্র জামাল হোসেনকে ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে তার ক্ষমতার উৎস, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জামাল হোসেন এক সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী ও এজেন্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এমনকি তিনি রাজশাহীর একটি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে জামাল হোসেন গড়ে তুলেছেন বাড়ি, গাড়ি ও নানা সম্পদের পাহাড়। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পূর্ব মুহূর্তে তিনি ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমিনের ঘনিষ্ঠ এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত হন।
স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা, যিনি পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, “জামাল হোসেনের অত্যাচারে আমরা বাড়িতে থাকতে পারতাম না। তার বাসা নিউমার্কেট ইসলামী ব্যাংকের বিপরীতে। এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়, অথচ এত অভিযোগের পরও পুলিশ তাকে ধরছে না কেন?” তার দাবি, জামালের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ ও প্রমাণ রয়েছে, যেগুলোতে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করার সুস্পষ্ট আলামত রয়েছে।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “যদি জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ থাকে, তাহলে তা তদন্তের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি।”
অন্যদিকে, স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, জামাল হোসেনের প্রভাব ও অর্থবলের কারণে তিনি পুলিশি গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলছেন। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের দাবি, জামাল হোসেনের অতীত কর্মকাণ্ড ও সম্পদের উৎস তদন্ত করে তাকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক।
জনগণের প্রশ্ন—একজন ব্যক্তি রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে বছরের পর বছর যেভাবে দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন, তা কিভাবে সম্ভব? প্রশাসন কি সত্যিই নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে, নাকি ক্ষমতার ছত্রছায়ায় কেউ কেউ আইনের আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছেন? এ বিষয়ে আরও তথ্য ও ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হবে পরবর্তী প্রতিবেদনে।