মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানার এসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) সায়েম চৌধুরীর বিরুদ্ধে আসামির ব্যক্তিগত মালামাল জব্দ করে তা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা ফেরত, নিজের নিরাপত্তা এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তার শাস্তি দাবিতে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলার গালা ইউনিয়নের বাসিন্দা কাদের দেওয়ান।অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৩ জুন কাদের দেওয়ানের আত্মীয় মোহাম্মদ শাফিজুল ইসলাম ৯৯৯-এ কল করেন পারিবারিক একটি ভুল বোঝাবুঝির জেরে। ওই কলের প্রেক্ষিতে এসআই সায়েম চৌধুরী ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তখন বাড়িতে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। কাদের দেওয়ানের দাবি, এসময় এসআই সায়েম কোনো অনুমতি ছাড়াই তার বাড়িতে প্রবেশ করে তার স্ত্রীর মোবাইল ফোন, ছোট ছেলের মোবাইল ফোন এবং একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা নিয়ে যান।পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে ১৫ জুন বিষয়টি মীমাংসা হয়। তবে কাদের দেওয়ান মালামাল ফেরত চাইলে এসআই সায়েম তা না দিয়ে বরং খারাপ আচরণ করেন। এমনকি গালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিক বিশ্বাস ফোনে অনুরোধ করলেও এসআই মালামাল ফেরত দেননি।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান শফিক বিশ্বাস বলেন, “ঘটনার বিষয়ে জানার পর আমি এসআই সায়েম চৌধুরীকে ফোনে অনুরোধ করি মালামাল ফেরতের জন্য। কিন্তু তিনি আমার অনুরোধও উপেক্ষা করেন। যেহেতু কোনো মামলা হয়নি, তাই তার এই কাজ গ্রহণযোগ্য নয়। আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করছি।”অভিযোগ প্রসঙ্গে এসআই সায়েম চৌধুরী বলেন, “৯৯৯-এ কলের পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছু মালামাল জব্দ করে থানায় এনেছি। মামলা হওয়ার কথা ছিল, তাই রেখে দিয়েছি। কিন্তু বাদী থানায় আসেনি।” তবে ১৮ দিন কোনো অভিযোগ ছাড়াই ব্যক্তিগত মালামাল রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি তো জব্দমূলে রেখেছি।”
এ বিষয়ে হরিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মুমিন খান বলেন, “এসআই সায়েম মালামাল জব্দ করেছে—এমন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। আমি তার সঙ্গে কথা বলবো। কোনো মামলা বা অভিযোগ না থাকলে পুলিশের ব্যক্তিগত সম্পদ জব্দ করে রাখার অধিকার নেই।”
সিংগাইর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফাহিম আসজাদ বলেন, “আমার দপ্তরে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার বলেন, “আমি বর্তমানে অভিযানে আছি। অফিসে ফিরে অভিযোগপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের মতে, কোনো ফৌজদারি মামলা ছাড়াই পুলিশের এমন কর্মকাণ্ড জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে। এ ঘটনায় জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।