পাবনা-০৩ আসন (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর) নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য। যদিও এসব উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিলবোর্ড দেখা যাচ্ছে, তবে দলীয় সিদ্ধান্ত এসেছে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয় এবং ঢাকায় গিয়ে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সঙ্গে দেখা করার জন্য ভিড় জমে। সাধারণ জনগণ যোগ্য নেতার নেতৃত্ব কামনা করলেও, অযোগ্য নেতাদের প্রতি তাদের আস্থা নেই। ফলে, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর এলাকায় রাজনৈতিক নেতৃত্বে পরিবর্তনের ইঙ্গিত স্পষ্ট।
চাটমোহর উপজেলার সাধারণ জনগণের প্রতিক্রিয়ায় দেখা যায় তীব্র অসন্তোষ। তাদের দাবি, “চাটমোহর এলাকার ভোটার সংখ্যা ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুরের চেয়েও বেশি। আমাদের উপজেলা থেকেই যদি কোনো যোগ্য প্রার্থী আসে, তাহলে তাকেই ভোট দেব। এমনকি জামায়াত ইসলামীর কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে তাকেও ভোট দিতে প্রস্তুত, কিন্তু বাইরের কাউকে নয়।”
বিভিন্ন মিছিল ও প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ সরব হয়ে উঠেছে। তাদের ভাষ্যমতে, বিএনপির প্রতি জনগণের আস্থা কমে গিয়ে ইসলামি দলগুলোর প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে।
ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুরেও নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র। স্থানীয় নেতাদের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে তারা বলছেন, “যে যখন আসে, তখন তার পা-চাটা শুরু হয়। জনগণের মনোভাব বোঝার চেষ্টা না করে শুধু নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চায়। এতে মানুষের মতামতের কোনো মূল্যই নেই।”
এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণের একটি বড় অংশ বলছে, “বিএনপির নেতা হলেই হবে না, সে যেন আমাদের এলাকারই হয়। আমরা অতীতে আওয়ামী লীগের সময়ও শিক্ষা পেয়েছি, বিশেষ করে বীরমুক্তিযোদ্ধা ওয়াজউদ্দিন খাঁন সময়কার অভিজ্ঞতা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। এখন নতুন প্রজন্ম সেই ভুল আর করতে চায় না।”
তাদের মতে, সময় ফুরিয়ে গেলে যেমন তা ফিরে আসে না, তেমনি নেতৃবৃন্দ ভুল সিদ্ধান্ত নিলে তার মূল্যও চুকাতে হবে। ফলে, এখনই সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।
নির্বাচনী এলাকায় জামায়াত ইসলামীর প্রতি মানুষের ঝোঁক বাড়ছে বলে মন্তব্য করছেন ইউনিয়ন পর্যায়ের একাধিক বিএনপি নেতাকর্মী। তারা জানান, বিএনপি যদি স্থানীয় যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেয়, তাহলে জনগণ বিকল্প হিসেবে জামায়াত ইসলামীর প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারে।
এমন মিশ্র প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জনবান্ধব উপজেলার সচেতন নেতাকর্মীরা।