মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সামরিক সংঘাতে এবার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের যুক্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ করার আহ্বান জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপজুড়ে বিশাল সামরিক শক্তি মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন।
ইতোমধ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে নতুন করে ৩০টির বেশি যুদ্ধবিমান ও রণতরি পৌঁছেছে। উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে ৪০ হাজার মার্কিন সেনা। ইউরোপে মোতায়েন করা হয়েছে বহু ট্যাংকার বিমান ও রণতরিও।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি জাতির উদ্দেশে ভাষণে স্পষ্ট বলেছেন, “আমেরিকা তার পতনের পথে হাঁটছে। কোনো হুমকি বা চাপ ইরান মেনে নেবে না।” জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত আলি বাহরেনিও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের রেডলাইন অতিক্রম করলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।”
এএফপি জানায়, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু প্রতিদিন যোগাযোগ রাখছেন এবং যৌথ সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে পরিকল্পনা করছেন। ইতিমধ্যে ইউএসএস নিমিৎজসহ রণতরি ও ফাইটার জেট পাঠানো হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং অনুযায়ী, তিন দিনে অন্তত ৩০টি মার্কিন ট্যাংকার বিমান ইউরোপের ঘাঁটিতে পৌঁছেছে।
বুধবার রাত ১১টার দিকে ইরান থেকে ‘ফাত্তাহ’ নামের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সফলভাবে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে প্রবেশ করে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দেয়, তবে তা পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করবে। রুশ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানও বলেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ভয়ানক মোড় নিচ্ছে।
ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, কর্মীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধ থাকবে। সব মার্কিন নাগরিককে নিজ নিজ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতো বিশাল সামরিক প্রস্তুতি ভবিষ্যতের একটি বৃহৎ যুদ্ধের ইঙ্গিত বহন করে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সও সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থামাতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেন।