শত শত কোটি টাকা খরচ করে মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও অপরিকল্পিত উন্নয়ন, খাল দখল ও নিয়মিত ড্রেন পরিস্কার না করা, পানি সরার ব্যবস্থা না থাকা, এই দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তি ঘটছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে পতিত সরকারের সাবেক মেয়র ৮২৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছিলেন। বিগত সাড়ে পাঁচ বছরেও প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৬০০ শত কোটি টাকা খরচ করে নগরীর বিভিন্ন ড্রেন নির্মান ও সাতটি খাল খনন করলেও নগরবাসী কোন সুফল পায়নি। ফলে প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। খুলনা মহানগর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন আজ নগরীর ৩১ নং ওয়ার্ডের পানি বন্দি মানুষের খোজ খবর নিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আষাঢ়ের শুরুতেই মৌসুমের প্রথম ভারী বর্ষনে তলিয়ে গেছে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা। সোমবার ও মঙ্গলবার রাত ভোর বৃষ্টিতে নগরবাসীর প্রধান সড়ক গুলো হাটু পানিতে ডুবে গেছে। ডুবে গেছে খালিশপুর, হাউজিং, এন/ও লাইন। নিন্মাঞ্চল সহ অনেক এলাকার বাসাবাড়ি – দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। এত ড্রেন আর কালভার্ট হয়েছে, কিন্তু কোনটা দিয়েই পানি নামে না। নগরীর পানি নিস্কাশনের প্রধান মাধ্যম ২২ টি খাল দখলমুক্ত ও নিয়মিত ড্রেন পরিস্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার মুল কারন শহরের ভৌগলিক অবস্থান এবং পানি ওঠা নামার সাথে সঙ্গতি না রেখেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়েছে।খাল, বিল দখল, যত্রত্ত্র ময়লা ও পলিথিন ফেলার কারনেও জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রুপ ধারন করেছে। খুলনা নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণের কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জনগনের ভোটে রাস্ট্রিয় ক্ষমতায় গেলে জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি খুলনা শিপইয়ার্ড শহরে চলাচলকারী যানবাহন, ব্যবসায়ী এবং পথচারীদের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। পরে তিনি নিজ উদ্যোগে জলাবদ্ধতা নিরসনে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। প্রয়োজনীয় লোকবল ও স্কেবেটরের ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি জলাবদ্ধ মানুষের জন্য খিচুড়ি রান্না করার যাবতীয় ব্যবস্থা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ৩১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গাজী আফসার উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো: আমিন আহম্মেদ, কাজী আব্দুল জলিল, হুমায়ুন কবির চৌধুরী আসাদুজ্জামান, মঈনুল ইসলাম কিরন,মোখলেছুর রহমান, এস এম জাকির হোসেন, রফিকুল ইসলাম, সেলিম হোসেন মন্টু, জনি প্রমুখ। প্রসঙ্গত, খুলনা নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর ২২ টি খাল দখল, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সময়মত ড্রেন পরিস্কার করা না করা, যত্রতত্র পলিথিন ও ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় না ফেলে ড্রেনে ফেলা জলাবদ্ধতার মুল কারন। এছাড়াও নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, উপরেল্লেখিত সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি খুলনা সিটি কর্পোরেশন, খুলনা উন্নয়ন কতৃপক্ষ ( কেডিএ) ও খুলনা ওয়াসার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের সমন্বয়হীনতা না থাকা প্রধান কারন জলাবদ্ধতা। আর এজন্য নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খুলনা সিটি কর্পোরেশন, খুলনা উন্নয়ন কতৃপক্ষ ( কেডিএ) এবং খুলনা ওয়াসার উন্নয়ন কাজে সমন্বয় থাকা একান্ত প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।