৯৭২২ দিনের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আইসিসির একটি বৈশ্বিক শিরোপা জয় করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (তৎকালীন নকআউট বিশ্বকাপ) জয়ের পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক কোনো টুর্নামেন্টে শিরোপা জিতল প্রোটিয়ারা। ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ২০২৩-২৫ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা।
চতুর্থ ইনিংসে ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এটি টেস্ট ইতিহাসে তাদের পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের নজির, যার মধ্যে চারটিই এসেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। লর্ডসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড।
টানা ৮ ম্যাচ জয়: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা টানা আটটি টেস্ট ম্যাচ জিতেছে। এই ধারাবাহিকতা দলটির ইতিহাসে অন্যতম সেরা।
মাত্র ১৩৮ রান প্রথম ইনিংসে: প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৩৮ রানে অলআউট হওয়া সত্ত্বেও জয় ছিনিয়ে আনে দলটি। বিদেশের মাটিতে টেস্টে জয় পেতে গিয়ে এটিই দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন প্রথম ইনিংস স্কোর।
ইংল্যান্ডে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়: ইংল্যান্ডে চতুর্থ ইনিংসে জয় পাওয়া দলগুলোর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন তৃতীয় স্থানে। ১৯৮৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৪৪ এবং ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড ৩৬২ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল।
অধিনায়ক বাভুমার দুর্দান্ত রেকর্ড: অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ১০ ম্যাচে ৯টি জয় এবং একটি ড্র—এই পরিসংখ্যানে বাভুমা সমান অবস্থানে রয়েছেন ইংল্যান্ডের পার্সি চ্যাপম্যানের সঙ্গে।
মার্করামের ম্যাজিক ইনিংস: ওপেনার এইডেন মার্করাম প্রথম ইনিংসে ‘ডাক’ মারার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন। এটি লর্ডসে চতুর্থ ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। শীর্ষে রয়েছেন রয় ফ্রেডেরিক্স (১৩৮ রান)।
চতুর্থ ইনিংসে তৃতীয় সেঞ্চুরি: এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে চতুর্থ ইনিংসে মার্করামের এটি তৃতীয় সেঞ্চুরি, যা দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তালিকার শীর্ষে রয়েছেন গ্রায়েম স্মিথ (৪টি)।
এই জয়ের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা শুধু একটি ট্রফি জয়ই করল না, বরং ক্রিকেটবিশ্বে তাদের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের বার্তাও দিল। লর্ডসে ঐতিহাসিক এ জয় তাদের টেস্ট ক্রিকেটে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিল।