প্রতিবেদক: মোঃ আমিনুল ইসলাম রাজু,শেরপুর জেলা
চলতি মৌসুমে শেরপুর জেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। শেষ মুহূর্তের ধান কাটা ও মাড়াইয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সেইসঙ্গে বোরোর বাম্পার ফলনে খুশি তাঁরা। অধিকন্তু বোরোর ভালো ফলন হওয়ায় বন্যার কারণে আমনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পেরেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, শেরপুর কার্যালয় চলতি মৌসুমে শেরপুর জেলায় ৯১ হাজার ৯৪৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬২ হাজার ৮৩৪ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড, ২৯ হাজার ৯৯ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ও ১৬ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশী সদর উপজেলার ২৪ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে এই ধান আবাদ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ লাখ ২৩ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন। ইতিমধ্যে আবাদের শতকরা ৯০ ভাগ ধান কেটে ফেলেছেন কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
সকালে সরেজমিনে সদর উপজেলার ভাতশাতা ইউনিয়নের কানাশাখোলা নামাপাড়া (মধ্যবয়ড়া) গ্রামে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন কৃষক খেতে বোরো ধান কাটছেন। কেউ কেউ ধান কেটে বাড়িতে এনে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছেন। আবার অনেক কৃষক মাড়াই শেষে শেরপুর-ঢাকা মহাসড়কের ওপর ধান ও খড় শুকানোর কাজ করছেন। সড়কের ওপর ধান ও খড় শুকানোর কাজ করায় যানবাহনগুলো বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকেরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কাও বাড়ছে।
এ সময় ভাতশালা ইউনিয়নের কানাশাখোলা নামাপাড়া গ্রামের কৃষক মো. আলাল উদ্দিন বলেন, তিনি ২ একর জমিতে হাইব্রীড জাতের বোরো ধান আবাদ করেছিলেন। ইতিমধ্যে ১৫ কাঠা (৭৫ শতাংশ) জমির ধান কেটেছেন এবং ধান পেয়েছেন ৬৫ মণ। একরে ৮০ মণ ফলন পাবেন বলে তিনি আশা করছেন। বোরোর বাম্পার ফলন হওয়ায় এই কৃষক বেশ খুশি বলে জানান।
অপরদিকে কানাশাখোলা নামাপাড়া গ্রামের আরেক কৃষক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি ২০ শতাংশ জমিতে উফশী জাতের ধান আবাদ করেছিলেন। আজ শুক্রবার ধান কেটেছেন এবং ভালো ফলন পেয়েছেন। এজন্য তিনি বেশ খুশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, শেরপুরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বন্যাত্তোর কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আমন মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক কৃষককে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে বীজধান ও রাসায়নিক সার প্রদান করা হয়েছে। এতে কৃষকেরা উৎসাহ নিয়ে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। সার্বিকভাবে বোরো ধানের বাম্পার ফলনে কৃষি নির্ভরশীল শেরপুর জেলার কৃষকদের মনে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
Leave a Reply