মোঃ বেলায়েত হোসেন, পলাশ, নরসিংদী: নরসিংদীর পলাশ উপজেলা ও ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের দুই নেতার জামিনে মুক্তিকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় এলাকায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কারামুক্ত হন ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান পাপন ও আরিফুল ইসলাম আরিফ। এর আগে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার হওয়া তিন নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় জড়ানোর অভিযোগ এনে স্থানীয় নেতাকর্মীরা নিন্দা জানান।
জামিন আবেদনের শুনানি শেষে নরসিংদী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান পাপন, আরিফুল ইসলাম আরিফ এবং আমানউল্লাহ আমান-এর জামিন মঞ্জুর করেন। তাদের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা।
মুক্তির পর চার হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ী ঢাক-ঢোল বাজিয়ে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন ছাত্রদল নেতাদের। বর্ণাঢ্য মোটরসাইকেল ও গাড়িবহর নিয়ে পুরো পলাশ উপজেলা প্রদক্ষিণ করে তারা জনসমাগম ও স্লোগানে মুখর পরিবেশ তৈরি করেন। এসময় নেতাকর্মীদের হাত নেড়ে সাড়া দেন জামিনপ্রাপ্ত নেতারা।
পরে পলাশ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির সভাপতি আওলাদ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আলম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শ্রমিক দলের সভাপতি আল-আমিন ভূঁইয়া, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহেল, ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি এসআই মনির হোসেনসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, “ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। আদালতের ন্যায়বিচার প্রমাণ করেছে সত্য কখনো চাপা থাকে না।” তারা আরও জানান, এই জামিন আন্দোলনের প্রতি গণমানুষের সমর্থনেরই প্রমাণ।
এসময় জামিনপ্রাপ্ত ছাত্রনেতারা ড. আবদুল মঈন খান, বাহাউদ্দীন ভূঁইয়া মিল্টন এবং সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১২ মে) কক্সবাজার থেকে এক সাবেক সেনা সদস্যকে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন তিন ছাত্রদল নেতা। পরদিন আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার জামিন মঞ্জুরের পর তারা কারামুক্ত হন।
এই ঘটনাটি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ছাত্র ও যুব রাজনীতির চলমান বাস্তবতা এবং এর প্রতি আইন-আদালতের প্রতিক্রিয়ার একটি উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত। ছাত্র সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক শক্তি ও জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে যে প্রতিক্রিয়া তৈরি করা সম্ভব, এ ঘটনা তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। নেতাকর্মীদের সংহতি, আইনি লড়াই ও সংগঠনের কাঠামোগত প্রতিরোধ ক্ষমতা রাজনীতিতে তাদের অস্তিত্ব ও প্রভাবের জানান দেয়।
Leave a Reply