প্রতিবেদক: মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :
একাডেমিক কার্যক্রম শুরু, নতুন নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন এবং পাঁচদফা দাবি বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঘোষণা করার দাবিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ( কুয়েট)র শিক্ষার্থীরা আবারোও আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় সংগ্রামের মঞ্চ হিসেবে অবস্থান কর্মসুচি পালন করবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো: রাহাতুল ইসলাম। শিক্ষকরা গতকাল পর্যন্ত ফেরেননি ক্লাসে। উভয় সংকটে পড়েছে কতৃপক্ষ। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বহিরাগত হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। টানা প্রায় তিন মাস বন্ধ রয়েছে সকল একাডেমিক কার্যক্রম। শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগ সহ পাঁচদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। পরবর্তীতে তারা পাঁচদফা দাবি থেকে একদফা দাবিতে ভিসির পদত্যাগের আন্দোলন শুরু করে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকার ভিসিকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু শিক্ষক লাঞ্চনাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। তদন্ত কমিটি ৩৭ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করে। পরবর্তীতে সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থী বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হয়। এরই মধ্যে গত সোমবার আবার ঔই ৩৭ শিক্ষার্থীকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। শোকজ নোটিশ পাওয়ার পর বিশ্বআিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবারো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। প্রতিবাদে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। এছাড়া পুর্ববতী তদন্ত কমিটি বাতিল পুর্বক নতুন তদন্ত কমিটি গঠনের লিখিত আবেদন নিয়ে ১৩ মে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সাথে সাক্ষাত করেন। এদিকে শিক্ষকদের লাঞ্চিত করার ঘটনায় জড়িতদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে ৫ মে প্রেসব্রিফিং করে সাত কর্মদিবসের আল্টিমেটাম দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নেতৃবৃন্দ। আজ বিকাল ৫ টায় শিক্ষক সমিতির আল্টিমেটাম শেষ হবে। ক্লাসে ফেরার বিষয় নিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সাহিদুল ইসলাম বলেন, ” আমাদের দাবির বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানতে আমরা শিক্ষক সমিতির এক্সিকিউটিভ বডি আজ ভিসি স্যারের সাথে দেখা করেছি। উনি ইতিবাচক মনোভাব পোষন করেছেন। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে দিয়ে আামদেরকে দ্রুত ক্লাসে ফেরার পথ সুগম করতে কুয়েট প্রশাসনকে সাত কর্ম দিবস সময় দিয়েছিলাম। আগামীকাল বিকাল ৫ টায় আমাদের দেওয়া সাত কর্ম দিবস শেষ হবে। শুক্র ও শনিবার আমরা দেখবো আমাদের দাবি কতটুকু বাস্তবায়ন হয়। এরপর রবিবার শিক্ষক সমিতির সভার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষকবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিব এবং প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়ে দিব। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অচলাবস্থার কারনে উভয় সংকটে পড়েছে কুয়েট কতৃপক্ষ। শিক্ষকদের ক্লাসে
ফেরাতে গেলে দায়ি শিক্ষার্থীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আবার শাস্তি দিতে গেলে আন্দোলন হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রায় তিন মাস ধরে চলা অচলাবস্থা কাটিয়ে
উঠতে পারছে না কতৃপক্ষ।
Leave a Reply