মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে খুলনায় তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালা ও লোকজ মেলার সমাপনি করা হয়েছে। গতকাল ফুলতলা উপজেলার দক্ষিনডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স প্রাঙ্গনে এবং রুপসার পিঠাভোগ রবীন্দ্র স্মৃতি সংগ্রহ শালায় সমাপনি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ( শিক্ষা ও আইসিটি) দেবপ্রসাদ পাল। তিনি বলেন, মানব সম্পর্কিত সমস্ত কল্যানকর ভাবনা ও প্রজ্ঞার সবকিছুই মানবতার সাথে জড়িত। এমনকি আমাদের এই পৃথিবী, সমাজ, রাস্ট্র এসব কিছুর কল্যান সমৃদ্ধি পরোক্ষভাবে মানবতার সাথে সম্পৃক্ত। রবীন্দ্রনাথের জীবন, কর্ম এবং সাহিত্য সমস্ত কিছুর কেন্দ্রবিন্দু ছিল মানুষ। তিনি ঠাকুর পরিবারের জমিদার ভাবনার মধ্যে বড় হলেও সমাজের নির্যাতিত মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছেন। তিনি বিশ্ব মানবতার কবি। তাইত তিনি অসহায় কৃষকদের ঋনের কবলে পড়ে যাতে সর্বশান্ত হতে না হয় সেজন্য কৃষকদের নিয়ে সমবায় ব্যাংক স্থাপন করেন। তিনি স্কুল প্রতিষ্ঠা করে সাধারণ মানুষের সন্তানদের লেখাপড়ার সুযোগ তৈরি করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ্যাতির শীর্ষে থেকে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি নোবেল পুরস্কার থেকে পাওয়া সমস্ত অর্থই সাধারণ মানুষের জন্য ব্যয় করেন। আমরা যদি রবীন্দ্রনাথের আদর্শকে ধারন করতে পারি তাহলে আজকের অনুষ্ঠানের আয়োজনটি সার্থক হবে। রুপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাগত বক্তব্য রাখেন, সহকারী কমিশনার ( ভুমি) অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী। রবীন্দ্রনাথ ও মানবতা বিষয়ে মুখ্য আলোচক ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হোসনে আরা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মৌমিতা রায় বক্তব্য রাখেন।। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও খুলনা জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এদিকে দক্ষিনডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্সে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাগত বক্তব্য রাখেন, ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসনীম জাহান।রবীন্দ্রনাথ ও মানবতা বিষয়ে মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সিরাজ সালেকীন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও খুলনা জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, রবীন্দ্রনাথ তার সাহিত্য কর্ম, সংগীত, দর্শন এবং জীবন দর্শনের মধ্য দিয়ে মানবতাবাদী ভাবনার এক উজ্জল প্রতিমুর্তি হয়ে উঠেছেন। রবীন্দ্রনাথের মানববতা শুধু তাত্ত্বিক নয়, ছিল গভীরভাবে ব্যবহারিক ও প্রানবন্ত। তার মতে মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। এই বিশ্বাসই তাকে বিশ্ব সাহিত্যে ও মানবতাবাদের ইতিহাসে চিরস্থায়ী স্থান দিয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
Leave a Reply