প্রতিবেদক: রেজাউল ইসলাম
নারায়ণগঞ্জ ১ এর রূপগঞ্জ থানা ছিলো, একটি যতসব অপকর্মের মহাযজ্ঞের কারখানা বা ফ্যাক্টরী। ৫ ই আগস্টের পূর্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর তাবেদারীতেই চলত রূপগঞ্জের শাসন কার্য। জমি দখল, মীল ফ্যাক্টরি দখল করে চাঁদাবাজি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় গুম, খুন, দাঙ্গা হামলা মামলা, নিরীহ নিপিরীত মানুষের উপর চলত অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন-নিপীড়ন। গাজীর হাতিয়ার হিসেবে রূপগঞ্জের চনপাড়া ছিল একটি মাদকের দেশ অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট সন্তান শেখ রাসেলের নামে এই বস্তিরটির পূর্বের নাম ছিল চনপাড়া বস্তি. কিন্তু সর্ব ধরনের অপরাধের কারণে চনপাড়া বস্তি নামে সবাই চিনতো । চনপাড়া বস্তিতে এমন কোন কাজ নেই যে, সেখানে সংগঠিত না হত । জানা যায় এই চনপাড়া বস্তি থেকে , রুপগঞ্জ থানায় পূর্বে যে অফিসার ইনচার্জরা ছিলেন, প্রতিদিন এখান থেকে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা অনৈতিক সুবিধা নিতেন। উল্লেখ করছি যে, যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেল নগর নামে নামকরণ করা হয়েছিল, সেখানে এত অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার কোন ভূমিকা ছিলনা। ওই এলাকার আশে পাশের কিছু লোকজন বলেন এই চনপাড়া বস্তিতে ছিল গাজী দস্তগীর প্রভাব ও তাবেদারি, কারণ এখান থেকে যতসব সন্ত্রাসী দিয়ে রূপগঞ্জে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী। তাই বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা গাজীকে সাপোর্ট দিয়ে চুপ করে রয়েছেন।
তবে ৫ই আগস্ট সরকার পদত্যাগের পর , রূপগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে এমনই বলেছেন এলাকার সচেতন মহল। তারা বলেন, বর্তমান অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত হোসেন স্যার যোগদানের পর মাদকের বিস্তার প্রায়ই কমে গেছে।
রূপগঞ্জের বর্তমান আইন শৃঙ্খলার বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে ওসি লিয়াকত হোসেন বলেন, পূর্বে যত সরকার ছিল, ভালো-মন্দ সেটা সাধারণ জনগণ বলবে, তবে আমার দায়িত্ব হল জনগণের জান মাল নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা.। তিনি বলেন আমি এই থানায় যোগদানের পর চেষ্টা করে যাচ্ছি অপরাধ কমিয়ে আনতে এবং কেউ যেন অপরাধের সাথে সংঘটিত না হয় সে বিষয়ে আমি এবং আমার পুলিশ সদস্যদের নজরদারি রয়েছে। তবে সাধারণ জনগণ আইনের প্রতি যখন শ্রদ্ধাশীল হবে, এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং অন্যায়কে ঘৃণা করবে দেশের আইন আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ততই উন্নত হবে। আইন শৃঙ্খলার বিষয়ে আরো জানতে চাইলে তিনি মামলার বিবরণ উল্লেখ করে বলেন,
গত এপ্রিল মাসে এই থানায় মাদক ২৪ টি, চুরি ৪ টি, গাড়ি চুরি ২টি, ধর্ষণের চেষ্টা ২টি, নারী ও শিশু ২টি, অস্ত্র আইনের ১ মামলা টি, মানব পাচার ১টি, ডাকাতির প্রস্তুতি ১টি, খুন ৩ টি ও অন্যান্য ৩৬টিসহ মোট ৭৪: মামলা হয়েছে। তাছাড়া জিডি হয়েছে সর্বমোট ৫৪০০ টি এবং অভিযোগ প্রায় তিনশত। মামলার বিবরণ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন , আমাদের কাছে যেই আসুক না কেন যাচাই বাছাই করে আমরা মামলা নেই , এবং তা পরবর্তী তদন্তের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়া চলমান থাকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ২৪ ঘন্টায় দিন এবং রাত ১৮ টি মোবাইল টিম স্বরেজমিনে বিভিন্ন স্থানে রয়েছে। এছাড়া অফিসার ইনচার্জ, ওসি তদন্ত ও ওসি অপারেশন তিনজন মিলে থানায় এবং বাইরের বিভিন্ন বিষয়গুলোতে ব্যস্ত থাকেন এমনটি বলেছেন তিনি । বাইরের বিশেষ অভিযান , অনাকাঙ্খিত কোন ঘটনা , কোন রাজনৈতিক প্রোগ্রাম , এসব নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার সক্রিয় ভূমিকায় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত হোসেন।
Leave a Reply