প্রতিবেদক: মো সালমান রহমান
শরীয়তপুরের জাজিরা, গোসাইর হাট সহ সবকটি উপজেলায় কাবিখা-কাবিটা, টি আর প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, ২০২৪ -২০২৫ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচির আওতায় জেলার উপজেলা গুলোর প্রতিটা ইউনিয়নে কাচা রাস্তা মেরামত ও উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।কিন্তু কোনো কোনো প্রকল্পে কাজ না করে আবার কোনোকোনোটাতে কিছু কাজ করে,কোদালে মাটি উল্টায়ে,কাজ শেষ দেখিয়ে,বিল তুলে নেয়া হয়েছে।অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য অভিযোগের আঙুল উঠেছে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে জাজিরা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইস্রাফিল হোসেন এর কাছে, তথ্য প্রাপ্তির আবেদনপত্র ফরম ক এর মাধ্যমে, ১৬ মার্চ ২০২৫ একটি আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়।তথাপিও তিনি তথ্য দিতে অপরোগতা প্রকাশ করেন,সেই সাথে কাজগুলো তদারকি করার জন্য সরকার তাকে দায়িত্ব দিয়েছে, কোন সাংবাদিককে দেয়নি বলে জানান।তিনি আরো বলেন তথ্য দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে,চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ দায়িত্ব প্রাপ্তদের বিরক্ত করে, খরচ চাইবে।
অন্যান্য উপজেলায় গোপনে কেউ কেউ তথ্য পেয়েছেন।তা নিয়ে দেখা গেছে কোথাও কোথাও কাজ হয়েছে,কোথাও হয়নি আবার কোথাও ২০-৩০ ফুট রাস্তা সম্পন্ন হয়েছে।আর জাজিরা উপজেলায় তথ্য না পেয়ে বিভিন্ন ইউপি ঘুরে দেখা গেছে পুরানো ব্রিজের রাস্তায় কোথাও ওঠার জন্য কিছু মাটি ফেলা হয়েছে।তবে এলাকার মানুষ কেউ বলতে পারে নি কোন প্রকল্পের কাজ এগুলো।
কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) এবং টেস্ট রিলিফ (টিআর) হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি। এসব কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে, দুস্থ ও অসহায় মানুষের অবস্থার পরিবর্তন ও উন্নয়ন সাধন করা। সরকার বলছে, এসব কর্মসূচি প্রান্তিক মানুষকে আত্মনির্ভরশীল হতে সাহয্য করবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এসব প্রকল্প একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর পকেট ভারি করার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। শুধু যে শরীয়তপুরে কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে তা নয়, প্রায়ই দেশের বিভন্ন স্থান থেকে এসব প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়।
দরিদ্র মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে সরকার কাবিখা, কাবিটা, টিআর-এর মতো অনেক কর্মসূচিই নিয়েছে। সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতিবাজ একটি গোষ্ঠীর কারণে সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নের লক্ষ্যে নেয়া কর্মসূচির অর্থ আত্মসাৎ হবে সেটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গোসাইরহাট ও অন্যান্য উপজেলায় প্রকল্প নিয়ে যেসব অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে তা খতিয়ে দেখতে হবে,উর্ধতন কর্মকর্তাদেরি। তদন্তে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।সেই সাথে যে সকল কর্মকর্তা নিজেদের সর্বেসর্বা মনোভাব প্রকাশ করছেন তথ্য না দিয়ে,তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার আহবান জানায় ভুক্তভোগি এলাকার সাধারণ মানুষ।
Leave a Reply