মোঃ আল আমিন হোসেন,বামনা (বরগুনা) সংবাদদাতাঃ দক্ষিণ বঙ্গের বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী বরগুনা দিয়ে বয়ে গেছে বিষখালী, বলেশ্বর ও পাযরা নদী। বরগুনা জেলা বামনা উপজেলাটি বিষখালী নদীর কোলঘেষে অবস্থিত বিষখালী নদীতে অসাধু জেলে নদীতে নিষিদ্ধ বাঁধা জাল, ভোগজাল, বেহুন্দিজাল ও কারেন্ট জালে দিয়ে অবাধে ধরা হচ্ছে ইলিশের পোনা। ছোট এসব মাছকে এলাকার হাট-বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে চাপিলা মাছ বলে। সেই সঙ্গে শুঁটকি বানানো হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু অসাধু উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা-কে ও এলাকার নেতাদের ম্যানেজ করে প্রতিনিয়তই নিষিদ্ধ জাল দিয়ে ধরছে পোনা মাছ। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে দি দিন চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মৎস্য আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী, সোয়া চার ইঞ্চির কম পরিধির ফাঁসের জাল ব্যবহার দন্ডনীয় অপরাধ। অথচ বামনা উপজেলার খাল ও নদীতে জেলেরা আধা ইঞ্চির কম থেকে পৌনে এক ইঞ্চি পরিধির ফাঁসের জাল ব্যবহার করে জাটকাসহ নানাবিধ ছোট মাছ নিধন করছেন। যা শহরসহ বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য মতে, নিষিদ্ধ জালে প্রতিদিন ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের যে পরিমাণ পোনা মাছ নিধন হচ্ছে তাতে আগামী মৌসুমে ইলিশ মাছ আহরণসহ অন্যান্য মাছ ব্যাপক হারে কমে যাবে বা ধ্বংস হয়ে যাবে। জেলেরা পোনা ধরলেও মৎস্য অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বামনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেচাঁন ও পুরাতন বামনার গ্রামের বাসিন্দা রাজু সাহা, কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চোখের সামনেই প্রতিদিন বাঁধা জাল, গোপজাল, বেহুন্দিজাল ও কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন অবৈধ জাল দিয়ে মাছের পোনা ধরা হচ্ছে।
রামনা ইউনিয়নের জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘গোপনে বেশিভাগ জেলেরা নৌকায় ভাসা জাল দিয়া মাছ ধরে তারা। এ জালে জাটকা, পোয়া, তপসি, টেংরাসহ নানা ছোট প্রজাতির অনেক মাছ ধরা পড়ে। যা বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বিভিন্ন হাটবাজারে। আর হাটবাজারে বিক্রির অযোগ্য মাছ শুঁটকি করে অবাধে বিক্রি করে দেয় তারা।
বামনা উপজেলা জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের নেতা মোঃ মোশাররফ হোসেন, বামনা সাহেববাড়ী বাজার কমিটির সহ-সভাপতি, সাবেক মৎস্যদলের সভাপতি জনাব মোঃ আঃ কুদ্দুস বলেন, ‘প্রসাশনের নাকের ডগায় অবৈধ বিভিন্ন ধরণের জাল দিয়ে ইলিশের পোনা শিকার হচ্ছে। এতে ইলিশের বংশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এমন চলতে থাকলে ভবিষ্যতে নদ-নদীতে পানি থাকবে, কিন্তু মাছ থাকবে না।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রতিবেদকে বলেন, ‘আমরা গত মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৭০টিরও বেশি অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের জনবল কম, ফলে সব জায়গায় পৌঁছানো আমাদের পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হয় না। এ সুযোগে অসাধু জেলেরা ইলিশের পোনা ধরে চাপিলা বলে গোপনে বিক্রি করছে। আমরা নদীতে টহল জোরদার করেছি।’
Leave a Reply