স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারে ডাকাতির ঘটনায় ৫ ডাকাতসহ ০৭ জন কে গ্রেফতার করেছে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ। এই সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহিত অস্ত্র, গুলি, লুণ্ঠিত টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল সকালে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা পিপিএম।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানাধীন শেরপুর ঈদগাহ রোড আবাসিক এলাকায় এমদাদ মোহাম্মদ সিরাজের বাড়ীতে কতিপয় দুস্কৃতিকারী গত ০৩/০২/২০২৫ তারিখ রাত ০২.৩০ ঘটিকার সময় বসতঘরের গেইটের তালা কেটে বসত ঘরের দরজার সিটকারী ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে বসতঘরে থাকা লোকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সর্বমোট ২৩ ভরি স্বর্ণালংকার এবং নগদ ৬,০৯,০০০/- টাকা লুন্ঠন করে নিয়ে যায়।
উক্ত ঘটনার বাদীর এজাহারের প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার মামলা নং-০৮, তাং-০৬/০২/২০২৫ ইং, ধারা-৪৫৭/৩৯২ পেনাল কোড রুজু হয়।
মামলা রুজু হওয়ার পর পুলিশ সুপার এম, কে, এইচ, জাহাঙ্গীর হোসেন (পিপিএম-সেবা), মৌলভীবাজার মহোদয়ের নির্দেশনায় মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানা এলাকা এবং সিলেট জেলার ওসমানীনগর এবং এসএমপি সিলেট এর দক্ষিন সুরমা থানা এলাকায় তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। মোঃ রায়হান মিয়া (২৫), পিতা-ময়না মিয়া, সাং-কামরাখাইর,থানা-জগন্নাথপুর, জেলা-সুনামগঞ্জকে গ্রেফতার করা হয় ,পরে তার দেওয়া তথ্য মতে আসামী ২। আক্কুল মিয়া ওরফে আকুল (৩৪), পিতা-মৃত ইদ্রিস মিয়া, সাং-নওধার পূর্বপাড়া, থানা-বিশ্বনাথ, জেলা-সিলেট, আসামী ৩। মোঃ আফাজ মিয়া (৪৯), পিতা-সঞ্জব উল্লাহ, সাং-পারকুল, থানা-নবীগঞ্জ, জেলা-হবিগঞ্জদেরকে গ্রেফতার করা হয়, এবং তাদের দেওয়া তথ্যমতে আসামী রায়হান মিয়ার বসতঘর হতে ০৬ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে জগন্নাথপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
অতপর ধৃত আসামীদেরকে উল্লেখিত মামলায় বিজ্ঞ আদালতের আদেশমতে ০২ দিনের পুলিশ রিমান্ডে আনা হয়।
২৮/০৪/২০২৫ তারিখ সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানা এলাকায় অভিযান করিয়া তাদের সহযোগী আসামী মোঃ মনর মিয়া (৫৫) পিতা মৃত সুজাত মিয়া, সাং কামড়াখাইর, থানা- জগন্নাথপুর, জেলা- সুনামগঞ্জ এর বসতবাড়ীতে অভিযান করে আসামীদের দেখানো মতে আসামী মনর মিয়ার বসতঘরের গ্যারেজ হতে ০২ (দুই) টি দেশীয় তৈরি পাইপগান, হাইড্রোলিক কাটার, তলা কাটার সাবল, মুখোশ উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয় এবং উক্ত অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্তে জগন্নাথপুর থানায় অস্ত্র আইন মামলা দায়ের করা হয়।
অতপর উক্ত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের দেওয়া তথ্যমতে সিলেট কোতোয়ালী থানাধীন সোবহানীঘাট এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত আসামী ৫। অশোক কুমার দে (৪০) কে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে আন্তজেলা ডাকাত দলের প্রধান আসামী ৬। তোফায়েল আহমদ তোফা (৩৬) পিতা মৃত নূর মিয়া, সাং মোবারকপুর,থানা- ওসমানীনগর , জেলা- সিলেটকে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্বর্ণালংকার ক্রেতা সিলেট শহরস্থ লালদিঘীরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মার্কেট এর জনৈক স্বপন কর্মকারের জুয়েলার্সে অভিযান করে লুন্ঠিত স্বর্ণের ক্রেতা আসামী ৭। দিনেশ কর্মকার (৬৫) কে গ্রেফতার হয় এবং তাহার হেফাজত হতে বাদীর লুন্ঠিত ০৪ ভরি ০৭ আনা স্বর্ণালংকার এবং স্বর্ণবিক্রির নগদ ৮,০৬, ৯৮২/- (আট লক্ষ ছয় হাজার নয়শত বিরাশি) টাকা উদ্ধার করা হয় ।
অতপর আসামীদের দেওয়া তথ্যমতে তাদের সহযোগী আসামীদের ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, উল্লেখিত ডাকাতির ঘটনা ছাড়াও তারা পরস্পর যোগসাজসে গত ২১/০৪/২০২৫ ইং তারিখ রাত অনুমান ০২.৫০ ঘটিকায় মৌলভীবাজার সদর মডেল থানাধীন ১নং খলিলপুর ইউপির বাগারাই গ্রামে প্রবাসী আব্দুর রহিম এর বসতঘরের কেচি গেইটের তালা কেটে বসতঘরে প্রবেশ করে পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্নালংকার এবং নগদ ২,৩৯,৫০০/-টাকা লুন্ঠন করার ঘটনায় জড়িত মর্মে স্বীকার করে। এই সংক্রান্তে পূর্বেই মৌলভীবাজার থানায় ডাকাতি মামলা রুজু হয়।
ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের তৎপরতা অব্যাহত আছে।
Leave a Reply