মল্লিক জামাল: বরগুনার তালতলীতে পাশের বাড়ির ভাবীর সহযোগিতায় এক কিশোরীকে নিয়ে রাতভর গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ইব্রাহিমসহ তার চার বন্ধুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার গত ৫ দিন ধরে থানায় গেলেও গণধর্ষণের মামলা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. শাহজালালের বিরুদ্ধে। এনিয়ে দৈনিক ঘোষনাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হলে দেশব্যাপী আলোচিত হয় ও তরিগরি করে মামলা নেয় পুলিশ। পরে প্রধান আসামী রিনা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সোমবার(২৮ এপ্রিল) বেলা তিনটার দিকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজালাল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।এর আগে সকালে রিনা বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নিশানাবাড়ি ইউনিয়নের তাঁতিপাড়া এলাকার বশিরের স্ত্রী রিনা বেগম তার দূরসর্ম্পকের আত্নীয় ইব্রাহিম নামের এক যুবকের সাথে পাশের বাড়ির এক কিশোরীকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয়। এর পরিপেক্ষিতে গত মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল রাতে রিনা বেগমের বাড়িতে ঐ কিশোরী ও তার মাকে ডেকে নেওয়া হয়। এসময় কিশোরীর মায়ের অজান্তে কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভনসহ বিভিন্নভাবে ফুঁসলিয়ে ইব্রাহিমের সাথে মটরসাইকেলে পাঠিয়ে দেয় রিনা বেগম। ইব্রাহিম ঐ কিশোরীকে নিয়ে রাত ১০ টার দিকে উপজেলার নকরী খেয়াঘাটে নিয়ে যায়। রাতে খেয়া না পেয়ে সেখানে একটি মাছের ঘেরে নিয়ে যায়। তারপর জোরপূর্বক কিশোরীকে রাতভর গনধর্ষণ করেন ইব্রাহিমসহ তার চার অজ্ঞাত বন্ধু। পরে সকালে ২’শ টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে কিশোরীকে চলে যেতে বলেন। তখন কিশোরী ইব্রাহিমকে বিয়ের কথা বললে তিনি বলেন,তোকে বিয়ের জন্য নিয়ে আসা হয়নি। তোকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এই বলে ইব্রাহিমসহ তার বন্ধুরা পালিয়ে যায়। এ দিকে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পরে বিভিন্ন স্থনে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঐ রাতেই ভুক্তভোগী পরিবার থানায় যায়। থানা থেকে বলা হয়েছে সকালে আসেন। ঐ কিশোরীর খোঁজ মিললে তাকে নিয়ে পরের দিন ২৪ এপ্রিল ফের থানায় যাওয়া হয়। পরে বিস্তারিত বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। তবে এ ঘটনায় থানার ওসি মো. শাহজালাল গণধর্ষণের মামলা না নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে ধর্ষণের আলামত সংরক্ষন করে রাখতে বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বিষয়টি ভিক্তভোগী পরিবার সাংবাদিকদের জানালে দৈনিক ঘোষণাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হলে বিষয়টি দেশব্যাপী আলোচিত হয়। এরপরে টনক নড়ে পুলিশের। ওই কিশোরীর বাবাকে ডেকে এনে ওই রিনা বেগমকে ধর্ষণের সহযোগিতা করা সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। এ ঘটনায় প্রধান আসামী রিনা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ
ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বলেন,আপনারা সত্যি নিউজ প্রকাশ করলে রাতেই পুলিশ আমার বাড়িতে যায় ও সকালে থানায় আসতে বলে। আমরা থানা এসে মামলা দায়ের করি। আমার মেয়ের এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার চাই।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহজালাল বলেন, গণধর্ষনের বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply