আবুল কাসেম,তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার তালতলীতে দৈনিক নয়াদিগন্ত সাংবাদিক সহ তিন সাংবাদিকের উপর ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় ইউসুফ আলীর দায়েরকৃত মামলায় তদন্ত ছাড়া চার্জশীট দিয়েছে তালতলী থানা পুলিশ। বাদী ও সাক্ষী ছাড়া মামলার নয়া তদন্তে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেছে মামলার সাক্ষী সহ সচেতন মহল।
তদন্ত কিংবা চার্জশীট প্রদানে মামলার বাদী নয়াদিগন্ত সাংবাদিক ইউসুফ আলী এবং মামলায় উল্লেখিত সাক্ষীদের সাথে কথা না বলে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তফা কামাল স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিকে নিয়ে তদন্ত কর্যক্রম চালায়। এতে রাগে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন মামলার সাক্ষী ও সাধারণ মানুষ।
মামলায় বর্নিত সাক্ষীরা জানান, মামলার বিষয়ে পুলিশ আমাদের কাছ থেকে কোনো স্বাক্ষ্য নেয়নি। এমনকি গত তিন মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোনো আসামীকে গ্রেপ্তার করেনি। হামলার পর থেকে আসামীরা এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশকে বারবার আসামীদের অবস্থান জানালে রহস্যজনক কারনে সাথে সাথে সটকে পরে তারা।
সাংবাদিকের দায়েরকৃত মামলায় আসামী আমির হোসেন ওরফে আরিফ শিকদার, মো. নাসির উদ্দীন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো: কালাম গাজীর সাথে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. মোস্তফা কামালের সখ্যতা রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
গত ৩১ জানুয়ারী আঙ্গারপাড়া গ্রামের মৃত আবুল হাশেম মুন্সীর বংশধরদের ষোল একর জমি দখল করতে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করছিল স্থানীয় ভূমিদস্যু আঃ সাত্তার ও শহীদুল্লাহ গং। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা জমি মালিকদেরকে ঘরের মধ্যে জিম্মি করে রাখে বাড়িঘর লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এদিকে জমি দখলের ঘটনায় সকাল ৭টায় জমি মালিক পুলিশ ও সাংবাদিকদের সংবাদ দিলে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে পৌঁছাতে ৪ ঘন্টা বিলম্ব করে তারা। সকাল ১১ টার সময় ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ ও সাংবাদিক। পুলিশের সামনে সন্ত্রাসীদের লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র মহড়া দেখে সাংবাদিক ইউসূফ আলী অস্ত্রের ভিডিও ধারণ করতে গেলে আমির ওরফে আরিফ শিকদার, বসির উদ্দিন, নাসির ভদ্র, রফিক সিকদার সহ ১৫/২০ জন সন্ত্রাসীবাহিনী লোহার রড, হকিস্টিক দিয়ে সাংবাদিক ইউসুফ আলীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে সংবাদ সংগ্রহে ব্যবহৃত ক্যামেরা ও মোটর সাইকেল, মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়।
সন্ত্রাসীদের হামলায় সাংবাদিক ইউসুফ আলীর নাকের হাড়ে একাধিক ফ্রাকচার সহ শরীর রক্তাক্ত জখম হয়। ইউসুফ আলীর উপর হামলার ঘটনা ভিডিও করতে গেলে সাংবাদিক জামাল ও আবুল হাসানের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। পুলিশের সামনে হামলার ঘটনায় এসআই সুশান্ত’র নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে থাকা ৫ পুলিশ কর্মকর্তাকে নীরব ভূমিকায় দেখা যায়।
সাংবাদিক ইউসুফ আলী বলেন, ‘ভূমি দখলের ভিডিও ধারণকালে সন্ত্রাসীরা আমার উপর নৃশংস হামলা করে সংবাদ সংগ্রহের মালামাল নিয়ে যায়। পুলিশ মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসলেও মামলায় মোটরসাইকেল উল্লেখ করেনি। এমনকি মামলার চার্জশীট প্রদানে এসআই মো. মস্তফা কামাল আমার সাথে কোন কথা বলেনি। তদন্ত কর্মকর্তা শারিকখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি, অত্র মামলার আসামি কালাম গাঁজীর সাথে আলোচনা করে চার্জশীট দেয়।
অভিযুক্ত এসআই মোস্তফা কামাল এর কাছে আসামি এবং আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি নিয়ে মামলার তদন্তের বিষয় জানতে চাইলে ফোন কেটে দেয়।
তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহ্জালাল বলেন, আওয়ামী লীগের লোকের সামনে তদন্ত করছে, বাদীর বিপক্ষে তদন্ত রিপোর্ট দিছে এবিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নাই। তদন্ত প্রতিবেদন যদি সঠিক না হয় বাদী কোর্টে নারাজি দিবে।
Leave a Reply