শাহাদাৎ হোসেন সরকারঃ আশুলিয়ার শিমুলিয়া তহসিল অফিসে সরকারি চাকরিরত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী না হয়েও প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে ভূমি সংক্রান্ত নিষ্পত্তি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে মান্নানের বিরুদ্ধে । স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ‘মান্নান’ নামের ওই ব্যক্তি দালাল ও প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে যোগসাজশে তহসিল অফিসের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছেন।
তাঁর হাত দিয়ে মাসে শতাধিক খারিজ (ভূমি মামলা নিষ্পত্তি) সম্পন্ন হচ্ছে, যার বেশিরভাগই হয় বিধি-বিধান না মেনে বা প্রথাগত শুনানি ছাড়াই।
এতে করে সাধারণ মানুষ ঠকছেন বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও ভূমি সেবাপ্রার্থীদের দেওয়া তথ্যমতে, মান্নান সরাসরি তহসিল অফিসের কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করেন। তিনি সহ দালালদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে দ্রুত খারিজ নিষ্পত্তি করিয়ে দিচ্ছেন অনেকেই । জানা যায় (এসএলএম) ও,ডি আইজি সংকেত ব্যবহার করে শুনানি ছাড়াই সম্পূর্ণ হয় খারিজ।
এমনকি তাঁর যোগাযোগ থাকায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও এই অবৈধ কর্মকাণ্ডে নীরব ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ভূমি অধিকার কর্মী ও আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছেন: কে এই মান্নান? তাঁর এমন ক্ষমতা কীভাবে এলো?
তহসিল অফিসের দাপ্তরিক কাজে একজন অচিহ্নিত ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ কীভাবে সম্ভব? ভূমি মন্ত্রণালয় বা জেলা প্রশাসন কেন এই অনিয়ম দেখছে না? ঢাকা জেলা প্রশাসক ও ভূমি সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে এই অনিয়মের তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শিমুলিয়া তহসিল অফিসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মান্নান আমার অফিসে কেউ নয়, “কিছু অভিযোগ আমাদের গোচরে এসেছে, বিষয়টি তদন্তাধীন।” তবে মান্নান বা তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। তবে এবিষয়ে অভিযুক্ত মান্নান কে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা সম্ভব হয়নি।
ভূমি মামলা বা খারিজ নিষ্পত্তির জন্য দালাল ও অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে সরাসরি সরকারি চ্যানেল ব্যবহার করতে নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে ভূমি আপিল বোর্ড বা দুদকের শরণাপন্ন হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে ভূমি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির ব্যাপকতা ও প্রশাসনিক দুর্বলতা নিয়ে।
অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি এবং ভূমি সেবাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে জরুরি পদক্ষেপ আছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
(পর্ব ১)
Leave a Reply