নিজস্ব প্রতিবেদক: ২৩ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ। এ সময় কুয়েটের ভিসির পদত্যাগের দাবিতে চলামান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ছাত্রপক্ষ’র কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স বলেন, নব্য স্বৈরাচারের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে দেশে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর(ভিসি) হলেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। কিন্তু স্বৈরাচার হাসিনার শাসনামলে আমরা অনেক ভিসিকে দেখেছি দলকানা ও রাজনৈতিক মতাদর্শ লালনের দরুন পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করতেন।স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর আমরা নতুন বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ভিসিদের অভূতপূর্ব পরিবর্তন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষার্থীবান্ধব করার জন্য নিবেদিতপ্রাণ দেখার আশা করেছিলাম।কিন্তু আমরা আশ্চর্যের সাথে লক্ষ্য করলাম খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদ বহিরাগতদের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় নিজ শিক্ষার্থীদেরকে অন্যায্যভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।যা অত্যান্ত লজ্জাজনক ও বিমাতাসুলভ আচরণ।শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগ দাবি করার পরও নির্লজ্জের মতো তিনি ভ্রুক্ষেপহীন ভাবে ভিসির পদে বহাল রয়েছেন। গত দু’দিন যাবত কুয়েটের শিক্ষার্থীরা অনশন করে মৃত্যুকোলে পতিত হলেও কুয়েত ভিসির টনক নড়েনি। সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কুয়েট শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে। এহেন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টারও কোনরূপ দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাওয়া যায়নি। দুই হাজার শহীদের রক্তের উপর আসীন উপদেষ্টাদের এমন গা-ছাড়া ভাব সত্যিই অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ অনতিবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে কুয়েটের অথর্ব দলকানা ভিসি ড. মোহাম্মদ মাছুদকে অপসারণ করার দাবি জানাচ্ছে এরই সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কুয়েট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান করছে। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে রাজপথ থেকে কুয়েট ভিসি ড. মাছুদের অপসারণ নিশ্চিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ।
একই সময়ে গত ২২ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ইসরাত জাহান ইশাকে নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ’র কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম নির্ঝর।
নির্ঝর বলেন,বাংলাদেশে নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের হার খুবই কম।জুলাই বিপ্লবের পর সেই সংখ্যাটি আশাব্যাঞ্জকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু আমরা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আমলেও দেখেছি নারী রাজনীবিদদেরকে হেনস্তা করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোংরা অপপ্রচার করে চরিত্রহনন করা হতো। যার ফলে পারিবারিক ও সামাজিক কুদৃষ্টি এড়াতে রাজনীতিতে আগ্রহী নারীরা রাজনীতিবিমুখ হয়ে যেতেন। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয়া নারীদের সাথেও এহেন ঘৃণ্য অপপ্রচার লক্ষ্য করেছি,যা অত্যান্ত দুঃখজনক। ফলতঃ এসব কারণে নারীরা রাজনীতিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গত ২২ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কিছু রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত একজন টিকটক ক্রিয়েটরের মদ্যপানের ভিডিওর সাথে বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ইসরাত জাহান ইশার একটি ছবিকে জুড়ে দিয়ে ঘৃন্য অপ্রপ্রচার চালায়।আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এরই পাশাপাশি এহেন অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে আমরা ভিক্টিমকে সাথে নিয়ে এসব দূর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আআইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা চাই যে নারীদের সমান অংশগ্রহণে জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে,বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেই নারীরা নিজেদেরকে নিরাপদবোধ করুক। কোন দূর্বৃত্তের অপপ্রচার এই অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চাইলে আমরা তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিব।
এ সময় নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা ও আইনানুগ ব্যবস্থার কথা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন হেনস্তার স্বীকার বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ইসরাত জাহান ইশা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আকিব হাসান, ফওজিয়া ফারিহা করবী, প্রচার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, ছাত্রপক্ষ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ জিহাদ ভূইয়া, ঢাবি শাখা যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির, ফারজানা আক্তার মিতু, ঢাবি শাখা সদস্য জুবায়ের হাসিব,শ্বাশত হক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply