মোঃ নয়ন মিয়া: সরকারি ব্রজমোহন কলেজ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যক্ষ ড. মোঃ ইব্রাহিম খলিল স্যারের সভাপতিত্বে ১১ টা সরকারি ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষক সম্মেলন কক্ষে, সরকারী ব্রজমোহন কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যক্ষ প্রোফেসর মোঃ হুমায়ুন কবির স্যার এর রাজাপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন হওয়ার কারনে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ শেখ তাজুল ইসলাম, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইউনুস স্যার,অধ্যাপক বিলাস মল্লিক স্যার,অধ্যাপক মাইনুল ইসলাম, অধ্যাপক নুসরাত জাহান, অধ্যাপক মুক্তা বেগম, হাতেমআলী কলেজের উপাদক্ষ মোঃ আখতারুজ্জামান স্যার সহ অনন্য ডিপার্টমেন্ট এর শিক্ষক মন্ডলি বৃন্দ।
অনুষ্ঠানে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যক্ষ ড. মোঃ ইব্রাহিম খলিল স্যার বলেন কলেজে শিক্ষার মান ও অবকাঠাম উন্নয়নে নিবদিত প্রান ছিলেন এই অধ্যক্ষ। একজন সফল শিক্ষক হিসেবে তাকে সরকারি ব্রজমোহন কলেজ চিরদিন মনে রাখবে। বিদায়ী অধ্যক্ষের এ কলেজের কর্মজীবনে নানা বিষয় স্মৃতিচারণ এবং তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনা করে বক্তব্য তুলে ধরেন। পরে ফুলসহ বিভিন্ন শুভেচ্ছা উপহার বিদায়ী অধ্যক্ষের হাতে তুলে দেন।
বিদায়ী অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ হুমায়ুন কবির স্যার বলেন,সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ও আমার কর্মকাল
সাগরবিধৌত নদীমেখলা তাল-তমালবেষ্টিত ছায়াঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে সত্য প্রেম পবিত্রতার মহান আদর্শ ধারন কারী শতবর্ষের এ কলেজ আমার ভালোলাগা ভালোবাসার কলেজ। যেখানে আমার বিচরন ১৯৮১- ১৯৮২ শিক্ষাবর্ষের উচ্চমাধ্যমিকের বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে। মুসলিম হলের টিনশেড এর ২৭ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলাম। যা আজ নেই। শিক্ষকতায় ২য় কর্মস্হল, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ২০০১ সালে প্রভাষক,২০০৫ সালে সহকারী অধ্যাপক, ২০১০ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও২০২৩ সাল হতে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছি। এ দীর্ঘ পথচলার সমাপ্তি ঘটবে। সমাজবিজ্ঞান বিভাগে আমার কর্মকালে আমি আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার চেষ্ঠা করেছি। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। নতুন কর্মস্থল এ যেন সুন্দর ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারি। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রফেসর মোঃ হুমায়ুন কবির -এর দীর্ঘ কর্মজীবন ছিল সততা, নিষ্ঠা এবং একাগ্রতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষার প্রতি তার যে গভীর শ্রদ্ধা এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি তার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, তা আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি শুধু পাঠদান করেই থেমে থাকেননি; তিনি শিক্ষার্থীদের জীবনে একজন পথপ্রদর্শক, একজন পরামর্শক এবং কখনো কখনো অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন।
তিনি তার শিক্ষাদানের মধ্যে দিয়ে শুধু বইয়ের জ্ঞানই প্রদান করেননি, বরং নৈতিক মূল্যবোধ এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাও দিয়ে গেছেন। তার ক্লাসে শিক্ষা কখনো সীমাবদ্ধ ছিল না; তা ছিল নতুন চিন্তা, সৃজনশীলতা, এবং আত্মবিশ্বাস সৃষ্টির একটি মঞ্চ।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রকিবুল হাসান বলেন, অধ্যাপক হুমায়ূন কবির স্যার সবসময় শিক্ষার্থীদের প্রতি তার স্নেহশীল মনোভাব এবং আন্তরিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছেন। তিনি তাদের দুর্বলতা বুঝে তা দূর করার চেষ্টা করেছেন, তাদের সামর্থ্যকে তুলে ধরেছেন এবং তাদের জীবনকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা যখন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতো, তখন তিনি শুধু তাদের সমস্যা সমাধান করেই ক্ষান্ত থাকতেন না; তিনি তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতেন এবং শেখাতেন কিভাবে সেই সমস্যাগুলো জীবনের শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করা যায়।
বিদায় হে মহামতি! বিদায় হে কর্মনিষ্ঠার প্রতীক! “চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়- বিচ্ছেদ নয় চলে যাওয়া মানে নয় বন্ধন ছিন্ন-করা আর্দ্র রজনী চলে গেলে ও আপনার স্মৃতি থেকে যাবে সরকারি ব্রজমোহন কলেজে।
অনুষ্ঠানে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী, পরিচালনা পর্ষদ এর সদস্যগণ,শিক্ষক মন্ডলী বৃন্দ ও সাবেক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply