লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্
সম্প্রতি এক আতংকের নাম ধর্ষণ ও বলাৎকার। প্রতিদিন কোননা কোন এলাকায় হচ্ছে এই ন্যাক্কার জনক বিষয়।বেড়ে চলে ধর্ষণ এবং নারী সহিংসতার মতো ঘটনা। শিশু, নারী, এমনকি ছেলেরাও এই সহিংসতা হতে রেহায় পাচ্ছেনা। অবুঝ একটি শিশুকে কিভাবে যৌন নির্যাতনের কথা মাথায় আসে? কিভাবে একটি ছেলেকে ঘৃণ্য বলাৎকার করার কথা চিন্তা করে? কিভাবে নারীরা ধর্ষণের শিকার হয় প্রতিনিয়ত? সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে, যেখানে ধর্ষণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। বলাৎকারকেও ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার বিধান করা হয়েছে। নতুন আইনে বলাৎকারকেও ধর্ষণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যার ফলে নারী, শিশুর পাশাপাশি ছেলেশিশুর ক্ষেত্রে ঘটলেও এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। তবে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়নি। এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলার তদন্ত ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে, যা পূর্বে ছিল ৬০ কার্যদিবস। প্রয়োজনে আরও ১৫ কার্যদিবস সময় নেওয়া যেতে পারে। বিচার কার্যক্রম অভিযোগ গঠনের তারিখ থেকে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে শেষ করতে হবে। এছাড়াও, ধর্ষণের শাস্তি পূর্বের মতোই মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড থাকবে। তবে অর্থদণ্ডের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ধর্ষণের ফলে মৃত্যু হলে আগে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হতো, যা বাড়িয়ে কুড়ি লাখ টাকা করা হয়েছে। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ক্ষেত্রেও অর্থদণ্ডের পরিমাণ কুড়ি লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দহনকারী বা বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করে নারী বা শিশুকে হত্যা বা বিকৃত করার অপরাধে অর্থদণ্ড দশ লাখ থেকে কুড়ি লাখ টাকা করা হয়েছে। ধর্ষণের উদ্দেশ্যে নারী বা শিশুকে মারাত্মক জখম করলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং কমপক্ষে দশ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই অধ্যাদেশকে স্থায়ী আইনের আওতায় আনা হোক। যাতে ধর্ষণ ও বলাৎকার কারী কোনভাবেই আইনের ফাঁক দিয়ে বের হতে না পারে। তাদের শাস্তি নিশ্চিত হলে তবেই ঘৃণ্য বলাৎকার ধর্ষণ বন্ধ হবে। বিচারের ধীর গতি, আলামত নষ্ট, সত্য ঘটনা চাপা দেওয়া, লোক লজ্জার ভয়ে প্রকাশ না করা, অপরিণত বয়সের মেলামেশা, পারিবারিক ভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার ফলে দিন দিন ধর্ষণ বেড়ে চলেছে। সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আদেশ নিশ্চিত করতে হবে। সব ধর্ষণ ও বলাৎকারের বিচার দ্রুত করতে হবে। ফাঁসি শুধু আইনে নয় বাস্তবায়ন হোক। লেখক: প্রাবন্ধিক
Leave a Reply