মেহেদী হাসান মেহের. বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মেয়েদের পোশাকে অশালীন ভাষায় কন্টেন্ট তৈরি করে ‘জুতির মা’ নামে খ্যাতি পাওয়া সাদ্দাম আল হাসানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। শিশুদের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও সমাজ বিনষ্টের কথা তুলে ধরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাকে নিষিদ্ধসহ প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইউএনও ফেরদৌসী আরার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন বাঞ্ছারামপুর প্রতিদিন নামক একটি গ্রুপের এ্যাডমিন প্যানেল।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাঞ্ছারামপুরের সাদ্দাম হোসেন কন্টেন্ট ক্রিয়েট করে ‘জুতির মা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ছেলে হয়েও মেয়েদের পোশাক (শাড়ি, কামিজ, ওরনা) পরে অশ্লীল অঙ্গি-ভঙ্গির মাধ্যমে কন্টেন্ট তৈরি করে এই নামে খ্যাতি পান তিনি। কুরুচিপূর্ণ নানান কথা আর পোশাকের ব্যবহারে সমাজের স্বাভাবিক ভারসাম্য বিনষ্ট করে চলছেন।
উপজেলার একাধিক বাড়িতে গিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে মহিলা আর শিশু জমায়েত করে অসঙ্গতিপূর্ণ বিনোদনের মাধ্যমে কলুষিত করছেন সমাজকে। যা এই উপজেলার শিশুদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ভুল পথে ধাবিত করছে। একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এই কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে নিয়ে পোগ্রাম করানো হয়, যা শিক্ষার ওপর সরাসরি নগ্ন হস্তক্ষেপ ও শিক্ষার্থীদের অশালীন পথে চলার স্পষ্ট দিক দেখায়। এভাবে চলতে থাকলে এই সমাজ হুমকির মুখে পড়বে অচিরেই, যা বাঞ্ছারামপুরের জন্য অবমাননাকর।
একাধিক বার এই উপজেলার মানুষ তাকে বারণ করলেও সবাইকে তিনি ( জুতির মা) হুমকি মূলক ও অশালীন কথা থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও একাধিক মানুষ তার এই কর্মের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে এর প্রতিকার চায় প্রশাসনের কাছে।
অভিযোগকারীদের দাবি, বাঞ্ছারামপুরে এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর যেন উপজেলায় কোনো উঠান বৈঠক না করতে পারে সেই ব্যবস্থা নেয়া। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেওে তাকে নিষিদ্ধ ঘোষিত করার দাবি জানান তারা।
অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন, সাদ্দাম আর এমন কাজে জড়িত হবেন না বলে মুচলেকা নেয়া এবং প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া।
বিষয়টি নিয়ে ইউএনও ফেরদৌসী আরা বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে দেখছি আমরা। আমার জানা মতে ওসি মহোদয়ের কাছেও অভিযোগ যাওয়ার কথা। আমি শীঘ্রই ওসির সঙ্গে বসে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
অভিযোগের বিষয়ে সাদ্দাম বলেন, আমি স্বীকার করি এই চরিত্র সমাজের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তবে আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য এই কন্টেন্ট ক্রিয়েট করতে হয়। এছাড়া আমার কাছে আর কোনো উপায় নেই। মায়ের জন্যই শাড়ি পড়ি, এটাই আমার আয়ের একমাত্র মাধ্যম।’
এর আগে গণমাধ্যমকর্মী সোহাগ মনির এক পোস্টে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সাদ্দামের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়টি নজরে আসে। তখন থেকেই সামাজিক ভাবে তাকে বয়কটের দাবি তুলেন উপজেলাবাসী। শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। সম্প্রতি বাঞ্ছারামপুর প্রতিদিন গ্রুপের এডমিন প্যানেলের সদস্য বাহার উদ্দিন জুতির মার কন্টেন্টে সমাজের বিরূপ প্রভাব নিয়ে একটি পোস্ট করেন। সেখানে নেটিজেনরা আবারও সমালোচনার ঝড় তুলে তার এমন কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের দাবি জানান।
মানবিকতার সহানুভূতি দেখিয়ে সমাজ বিনষ্টের কারিগর বলেও অভিযোগ তুলেন অনেকে। এছাড়াও মেয়েদের টার্গেট করে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ আসে তার বিরুদ্ধে।
Leave a Reply