শাহাদাৎ হোসেন সরকার: আশুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজিউর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আসামিকে আটক করে অবৈধভাবে ছেড়ে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, সাইদুর রহমান নামে ৪ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ও আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আটক করা হয়েছিল।
ঈদের আগে ধরে থানায় না নিয়ে সারা রাত তাকে পুলিশ ফাঁড়িতে আটক রাখার পর সকালবেলা ছেড়ে দেওয়া হয় ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাইদুর রহমান এই ঘটনার শিকার। অনেকেই অভিযোগ করছেন যে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজিউর রহমান সম্ভবত অবৈধ অর্থের বিনিময়ে এই আওয়ামী লীগ নেতাকে ছেড়ে দিয়েছেন।
ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি হওয়ায় সাইদুর রহমান টাকার বিষয়ে মুখ না খুললেও সন্দেহ বাজন হিসেবে আটক হয়েছিল বলে জানান তিনি।
আরেকটি বক্তব্য বলেন তার বিরুদ্ধে মামলা থাকার কথা শিকার করেন তিনি।
এছাড়াও গত ২৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে বিকেলে আরেকটি উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটে। আউক পাড়া মাজার গেইট এলাকা থেকে কামাল মাস্টার (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে আশুলিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে আটক রাখার পর কামাল মাস্টারের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে রাজু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু সেখানে পুলিশ ইনচার্জ রাজিউর রহমান ও তার ফোর্স কামাল মাস্টারের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রেখেই পালিয়ে যায় ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজিউর রহমান এক বিচিত্র আচরণ করেন। তিনি সাংবাদিককে তুষার নামে এক ব্যক্তির নম্বর দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
যখন সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেন কেন তুষারকে ফোন করতে হবে, তখন রাজিউর রহমান সাংবাদিককে হুমকি দেন । কল রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তুষার বর্তমানে নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও তিনি আসলে একজন ছাত্রলীগ কর্মী।
তার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানা সহ বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ, প্রতারণার মামলা রয়েছে এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে। এছাড়া একটি প্রতারণা মামলায় তিনি তিন বছরের সাজা প্রাপ্ত পলাতক আসামি।
এই তুষারের সাথে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজিউর রহমানের সখ্যতা রয়েছে এবং তারা একত্রে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে ।
আরো জানা যায় বিভিন্ন মামলার আইয়ু হওয়ায় আসামিদের না ধরে তাদের সাথে বসে চা আড্ডা করেন বলেও জানান অনেকেই ।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনাগুলো নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন কিভাবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এভাবে আইনের ঊর্ধ্বে থেকে অপকর্ম চালিয়ে যেতে পারেন।
তারা দাবি করেছেন এই বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।
বিশেষ করে যখন একজন পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের হুমকি দিচ্ছেন এবং পলাতক অপরাধীদের সাথে হাত মিলাচ্ছেন, তখন তা সমাজের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বার্তা বহন করে ।
এই ঘটনাগুলো পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং জনগণের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আস্থা হ্রাস করছে।
আশা করা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
Leave a Reply