বিশেষ প্রতিনিধি, বগুড়া: বগুড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং আইন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি প্রদান করেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরা।
গতকাল রবিবার ২৩ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তিনটি মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বরত মাননীয় উপদেষ্টাকে উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মাননীয় উপদেষ্টাদ্বয়কে প্রেরিত স্মারকলিপি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সমূহে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাবাদী কিছু শিক্ষক কর্তৃক কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে ভুল তথ্য দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।
বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরা উল্লেখ করে বলেন, আমরা বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদে কর্মরত। ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদটি বাংলাদেশ সরকারের গেজেট, অর্গানোগ্রাম, মন্ত্রণালয়ের আদেশ, বদলির আদেশ, ট্রেনিং আদেশ অনুযায়ী শিক্ষক পদ।
বর্তমানে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদের নিয়োগ যোগ্যতা পদার্থ ও রসায়নসহ স্নাতক ডিগ্রি বা সমমানের ডিগ্রি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী পদটি ব্লক নয়। তারপরেও ডিপ্লোমা সিন্ডিকেট চক্র ২০১১ এবং ২০২০ সালে নিয়োগ বিধিতে ব্লক করে রেখেছে।
আমাদের পদোন্নতির যথাযথ ডকুমেন্টস থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেট চক্র আমাদেরকে পদোন্নতির সুযোগ দেয়নি। আমরা বারবার লিখিত দাবি জানালেও কোন আশানুরুপ পদক্ষেপ না দেখে আমাদের পক্ষ থেকে আমাদের সিনিয়র পদ জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টে ৫৭২১/২৪ রিট পিটিশন দায়ের করি উক্ত রিট পিটিশন শুনানি শেষে মহামান্য হাইকোর্ট আমাদের কে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতির পক্ষে রায় দেয়।
তারপরেও মহামান্য হাইকোর্টের এই রায়কে অবমাননা করে প্রত্যেক পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাবাদী শিক্ষকরা কোমলমতি শিক্ষর্থীদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে উস্কে দিয়েছেন এবং তাদের ১০ম গ্রেডের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা ক্রাফট ইন্সট্রাক্টররা নিয়ে যাচ্ছে এবং তারা বের হয়ে চাকরি পাবেননা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইন্সট্রাক্টররা আরও জানান, আমরা যে পদে অর্থাৎ জুনিয়র ইন্সট্রাকটর পদোন্নতির রায় পেয়েছি ঐ পদের চেয়ে বর্তমান নিয়োগ যোগ্যতা আমাদের বেশি। ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদের বর্তমান নিয়োগ যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হতে পাশকৃত প্রায় ৫০০ জন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার, ১২০০ জন পদার্থ/রসায়ন স্নাতক ডিগ্রি এবং ৪০০ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার কর্মরত।
তারপরেও আমাদেরকে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, এর চেয়ে আর কি বৈষম্য হতে পারে? আমরা হাইকোর্ট রিট করার কারনে কোমলমতি ছাত্রদের দিয়ে হত্যার হুমকি, লাঞ্ছনা, অশ্লীল শ্লোগান দিয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের মহিলা সহকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে অশালীন ও কুরুচিপূর্ন মন্তব্য করছে।
আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ২৫০০ জন ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি এবং কর্মস্থলে স্বাভাবিক ভাবে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না এ ব্যাপারে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের শরনাপন্ন হলেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
তাই দেশের সকল কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি রোধে জড়িত ব্যক্তিদের চিন্তিত করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। নতুবা আমরা ২৫০০ জন ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর রাস্তার নামতে বাধ্য হব বলেও জানান উপস্থিত ইন্সট্রাক্টরা।
Leave a Reply