শিক্ষা বিষয়ে – শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থী সহ সমগ্র দেশবাসীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে
আজিজুন নাহার: ১৬/০৩/২০২৫ তারিখে বাংলাদেশের সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ এর ১১ দফা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পাশে রাজু ভাস্কর্যের সামনে দুপুর ১টায়। গণ স্বাক্ষর কর্মসূচি উদ্বোধন করেন জুলাই গণ অভ্যুত্থানের একজন আহত যোদ্ধা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে শহীদ হওয়া শহীদ সালাউদ্দিন ভাই মোঃ আবু জুবায়ের। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সিয়াম খান, শাহ মুহাম্মদ আলী আব্বাস এবং আলী মাহাদী । উক্ত ১১ দফা শিক্ষার্থীদের দাবি গুলো নিম্নে দেওয়া হলো। দাবি সমূহ : ১. শিক্ষা খাতে ব্যয়ের জন্য GDP (জিডিপি)অনুসারে কমপক্ষে ৬% বরাদ্দ রাখতে হবে। সেই সাথে এই বরাদ্দের ব্যয়ের সম্পূর্ণ হিসাব জনগণের সামনে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। (ইউনেস্কোর পরামর্শ, একটি দেশের জিডিপির কমপক্ষে ৬% শিক্ষাখাতে ব্যয় করা উচিত। অথচ, বাংলাদেশের জিডিপির মাত্র ১.৬৯% শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয়া হয়, যা প্রতি বছর কমেই যাচ্ছে।) ২. প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত সকল বই রাষ্ট্র কর্তৃক বিনামূল্যে প্রদান করতে হবে। শিক্ষার বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ, সংকোচন ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে। টাকা যার শিক্ষা তার এই চিন্তা চেতনার বিলুপ্তি করতে হবে। ৩. শিক্ষা কারিকুলাম থেকে Unseen বিভাগের বিলুপ্তি ঘোষনা করতে হবে। ৪. শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে হবে সেই সাথে শিক্ষকদের সর্বোচ্চ বেতন কাঠামো প্ৰণয়ন, যথাযথ সামাজিক মর্যাদা প্রদান এবং শিক্ষকদের দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে । ৫. অবিলম্বে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে এবং এতে শিক্ষার্থীদের এবং অভিভাবকদের সর্বাধিক অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা কারিকুলাম হবে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত, অযৌক্তিকভাবে ঘন ঘন পরিবর্তন করা যাবে না ।৬. পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে কারিগরি ও আধুনিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণের (ফ্রিল্যান্সিং / স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণ) মাধ্যমে, জনসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে করে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। এটির অন্যতম উদ্দেশ্য বেকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়া । ৭. জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম ২০২১ প্রণয়নকারী, শিক্ষা ধ্বংসের দোসর এবং শিক্ষা খাতের বরাদ্দের দুর্নীতি কারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে । ৮. প্রত্যেকটি বিভাগ ও শ্রেণির জন্য, সাধারণ বিজ্ঞান নামের একটি বই প্রণয়ন করতে হবে, যা শিক্ষাকারিকুলামে চতুর্থ বিষয় (ফোর্থ সাবজেক্ট বুক) হিসেবে বাধ্যতামূলক থাকিবে। ৯. সার্বজনীন সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে যা আত্মরক্ষার জন্য বিশেষায়িত। ১০. প্রত্যেকটি পাবলিক পরীক্ষায় পূর্বের ন্যায় কমপ্লিমেন্টাল পরীক্ষা পুনরায় চালু করতে হবে। ১১. শিক্ষক নিয়োগ সহ সকল পরীক্ষায় ভাইবা/মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করতে হবে। কারণ এই ভাইবা পরীক্ষায় – অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে দুর্নীতি হয়। যা অযোগ্য ব্যক্তি নির্বাচনের সবচেয়ে বড় আখড়া। উপরোক্ত বিষয়গুলো কেন্দ্র করে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারনে উন্নত ও ন্যায্য শিক্ষা কারিকুলাম ও শিক্ষাক্রম প্রণয়নের দাবিতে গণসচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের এই ১১দফা দাবি সমূহের পক্ষে স্বাক্ষর দিন ও সার্বিক সহযোগিতা করুন।
Leave a Reply