1. masudkhan89@yahoo.com : Ghoshana Desk :
  2. zunayedafif18@gmail.com : Mahir Al Mahbub : Mahir Al Mahbub
  3. masudkhan89@gmail.com : Masud Khan : Masud Khan
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও আমার ভাবনা - দৈনিক ঘোষণা
ব্রেকিং নিউজ :
গোমস্তাপুরে নিরাপদ অভিবাসন ও বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের পুনরেকত্রীকরণ বিষয়ক কর্মশালা আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন রূপগঞ্জে শীতলক্ষায় ভেসে উঠল নিখোঁজ এসএসসি পরীক্ষার্থীর লাশ ধর্ষণের অভিযোগের সহযোগিতা করতে গিয়ে হেনস্তা: কোনাবাড়ী থানায় ওসির হাতে লাঞ্ছিত সাংবাদিকদের গায়ে হাত কুয়েটে উপাচার্য ও উপ উপাচার্য অব্যাহতির সিদ্ধান্তে ন্যায় বিচার পরাজয় হয়েছে, শিক্ষক সমিতি। নবাবগঞ্জে মোগর পাড়া প্রাচীন বিষ্ণু মন্দিরের জায়গা দখল ও দূষণ বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায় স্থানীয়রা সীমানা নির্ধারণ করে বন রক্ষা, বালু-দখলদারদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স শিবচরে গলাকাটা যুবকের মরদেহ উদ্ধার কক্সবাজার ওস্তাদ জাহাঙ্গীর রিসোর্ট ও কুয়াকাটা গেস্ট হাউজের সাথে ডিসকভার ট্যুরস এন্ড ট্র্যাভেলস এর সমঝোতা চুক্তি অনুষ্ঠিত সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও আমার ভাবনা

  • আপডেট সময় : বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫
  • ৮৪ দেখেছেন

মোঃ বেল্লাল হাওলাদার: রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। শান্তি, কল্যাণ ও সৌভাগ্যের বার্তা নিয়ে আসে এই পবিত্র মাসটি। মুসলিম উম্মাহ শান্তিতে রোজা পালন ও অন্যান্য আমল নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করবে এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে এমনই প্রত্যাশা সবার। অথচ এহেন পবিত্র রমজানের শান্তির আবহেও কিছু বিপথগামী মানুষ মেতে উঠেছে খুন, ধর্ষণসহ নানা অপকর্মের ঘেরাটোপে। রমজানের শুরু থেকেই সৃষ্টি হয়েছে শান্তির বিপরীতধর্মী অশান্তির এক রাজত্ব। বলা বাহুল্য দেশের মানুষ যেন মহাসংকটকাল অতিক্রম করছে। এই সংকট মোকাবিলা করতে গিয়ে বেশ কিছুটা চাপে আছে বাংলাদেশ, এ কথা আজ অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

বর্তমানে দেশের চালচিত্র পর্যবেক্ষণ করলে যে কোনো সচেতন ও বিবেকবান মানুষের হৃদকম্পন সৃষ্টি হয়। আমজনতাকে ভাবনায় ফেলে এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের লাল সবুজের দেশটি আসলে যাচ্ছে কোথায়, কেমন আছেন দেশের আটষট্টি হাজার গ্রাম বাংলার মানুষ? এসব নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই, সবাই যেন নির্বিকার! দেখা যাচ্ছে কবি-লেখক বোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ দেশের রাজনীতি নিয়ে ভাবছে না। বর্তমান প্রেক্ষাপট এমন একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে নিজেদের পেট চর্চা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই! প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে খুন ডাকাতি হচ্ছে, সাধারণ মানুষ নীরব ভূমিকায় চেয়ে চেয়ে তা দেখছে বা ঘটনার স্বাক্ষী হচ্ছে। কিছু বলার সাহস হারিয়ে হাহাকার করছে। প্রতিবাদের ভাষা নেই, নির্বাক। হয়তো বা দু’একজন লিখেন বা টিভির টকশোতে আলোচনা করেন। এমনকি রাজপথে হয় প্রতিবাদ সমাবেশ। তাতে বিভীষিকাময় ধর্ষণ, ঘুষ-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, দখলবাজির মতো অপরাধ বন্ধ হচ্ছে না মোটেই! দেখা যাচ্ছে মাঠে প্রসাশন থাকা অবস্থায় এ অপকর্মগুলো দিন দিন বেড়েই চলেছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসনও নিরাপদ নয়। তাদের ওপর হচ্ছে হামলা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে হুমকি! সোশ্যাল মিডিয়ায় ও পত্র-পত্রিকায় চোখ বুলালে দেখা যায় ঘটেই চলছে যতো অপ্রত্যাশিত ঘটনা। লক্ষণীয় বিষয় হলো ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক বর্বরতা বেড়েই চলছে। দীর্ঘ হচ্ছে ধর্ষিতা নারী ও শিশুর মিছিল। বিশেষ করে মাগুরার ছোট্ট শিশু আছিয়ার সাথে ঘটে যাওয়া নির্মমতা মোটেও মেনে নেওয়া যায় না। শিশুটি এখনও কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দেয়নি। অথচ সেই শিশুর ওপর নরপিশাচরা যৌবনের খায়েস মিটাতে ধর্ষণ করে।

শিশুটি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আছিয়াকে বাঁচাতে। মহান স্রষ্টা হায়াত দান করুক সেই দোয়া করছে দেশবাসী, দোয়া করছি আমিও। বেঁচে থাকলে সারাজীবন এই ক্ষত বয়ে বেড়াতে হবে তাকে। শিশুটির সাথে ঘটে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা তার বোনের কাছে শুনে বিবেকবান মানুষরা কেঁদেছে। মায়ের আর্তচিৎকারে হয়েছে আকাশ বাতাস ভারি। শুধু আছিয়া একা নয়; আছিয়ার মতো অনেক শিশু ধর্ষিত হচ্ছে। আজ মাদরাসার শিক্ষকের কাছেও পড়তে যাওয়া শিশু নিরাপদ নয়। আসলে এরা কি রক্তে মাংসে গড়া মানুষ? এসব অপকর্ম দেখে ভাবতেও ঘৃণা হয়, নিজেকে একজন পুরুষ ভাবতে। এতে বোঝা যাচ্ছে ক্রমশই নিজস্বতা হারাচ্ছে মানুষ। সাময়িক আকর্ষণ ও সুখ বিলাসের জন্য বোধ বিবেক বিবেচনাকে বিসর্জন দিচ্ছে, হারাচ্ছে ন্যায় নীতি ও আদর্শ । নির্দ্বিধায় বলাই যায়, লোভের বসে হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের শৈল্পিক সৃজনশীল মানসিকতা।

হাসিনা সরকার পতনের পর এসব অপকর্ম দেখার জন্য এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের দেশের মানুষ মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা। মানুষ বড্ড অসহায়, শঙ্কিত, আতঙ্কবোধ করছে। জুলুমবাজদের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হলেই কাম সারা। ওদের কাছে দেশের রিকশাচালক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, সরকারি আমলা, কামলা, শিক্ষক, সাংবাদিক, নারী, শিশু, বৃদ্ধ, দিনমজুর কেউই নিরাপদ নয়। অথচ অন্তবর্তী সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিলো সর্বোচ্চ। ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে ভেবেছিলো দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে; মানুষ ন্যায় বিচার পাবে, বৈষম্য দূর হবে। কই? অন্যায়, দুর্নীতি, বৈষম্য দূর করা সম্ভব হয়েছে আদৌ? বরং নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে খুনখারাবি, ধর্ষণ, হামলা, মামলা, লুটপাট, চুরি ডাকাতির দখলের অন্ত নেই। এমনকি আল্লাহর ঘরে আশ্রয় নিয়েও খুনিদের হাত থেকে শেষ রক্ষা হয়নি। অনেকে সুযোগের সৎ ব্যবহারে বনে গেছেন হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক।

বুলডোজার দিয়ে অনেকের বসত বাড়ি ভাঙ্গা হয়েছে। কিছু ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখলে সাধারণ মানুষের হৃদয় ভয়ে থর থর কাঁপন শুরু হয়। যদিও এমন অরাজকতা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অন্তবর্তী সরকারের কঠোর বিবৃতি শুনেছি; স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাত তিনটার সংবাদ সম্মেলন দেখেছি। এমনকি সেনাবাহিনী প্রধান সংকট আঁচ করতে পেরে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। কিন্তু এতে পরিবর্তনের দৃশ্য খুবই কম দেখছি। কে শোনে কার কথা; সবাই হামকে বাবা! এমন একটা পরিস্থিতিতে কে সমন্বয়ক, কে ছাত্র, কেইবা নেতা? চেনা বড় দুস্কর! অপকর্মের ক্ষেত্রে সবাই একত্রে লাফিয়ে পড়ছে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে।

সন্দেহ নেই, গণঅভ্যুত্থানের পর একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে দেশে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় একমাত্র একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। যদিও প্রধান উপদেষ্টার কথায় তেমন প্রত্যয় পরিলক্ষিত হয়। সব পক্ষের ঐক্যমতে সংস্কারের তালিকা খুব সংক্ষিপ্ত হলে, আগামী ছয় মাসের মধ্যেও নির্বাচন হতে পারে। আবার জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে কিন্তু সবাই একমত নয়। বিএনপির সাফ কথা, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। এদিকে সদ্য গঠিত হওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দিয়েছেন কড়া বার্তা। তিনি বলেছেন ‘দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে, তা শহিদদের সঙ্গে চরম বেঈমানি হবে। হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার ও সংস্কারের জন্য ঐক্যমতে পৌঁছালেই আমরাই নির্বাচনে সহযোগিতা করবো।’ এই বক্তব্য সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, এতে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। সমালোচনা হতেই পারে, কারণ এখন তিনি তো উপদেষ্টা নয়, তাহলে কিভাবে নির্বাচনে সহযোগিতা করবেন? এতে প্রশ্ন এসেই যায়। অন্তবর্তী সরকার তাহলে কি তাদের সাথে লিয়াজু করে দেশ পরিচালনা করছে? অবশ্য গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুর ইতোমধ্যে কঠোর সমালোচনা করেছেন সরকার এবং ছাত্রদের গড়া নতুন দল নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, ‘এই সরকারের উপদেষ্টা পদে থেকে তারা যদি দল গঠন করে, তাহলে তো নবগঠিত দলটি সরকারি দল হয়ে গেলো।’ বাস্তবতা যদি এমন হয়, তাহলে জনগণের মাঝে নতুন দল, সরকার ও নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ রয়েই যাবে।

নাহিদ, আসিফরা যখন উপদেষ্টা হন, তখন দেশের জনগণ আশা করেছিলো বিচার ও সংস্কারের কাজ তাদের হাতেই হবে। পরবর্তীতে মাহফুজকেও করা হলো উপদেষ্টা। আসিফ, মাহফুজ উপদেষ্টা পরিষদে থাকলেও নাহিদ কাজের কাজ অর্থাৎ প্রস্তাবিত সংস্কার কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই পদত্যাগ করেন। তিনি রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও আয়েসী জীবন ছেড়ে নিয়েছেন নবগঠিত এনসিপি-এর দায়িত্ব। নিজের দল নিয়ে দাঁড়িয়েছেন জনগণের পাশে। যে দলকে ইতোমধ্যে প্রতিপক্ষরা কিংস পার্টি উপাধি দিয়েছেন।

গঠিত দলের প্রধান হিসেবে আবার সরকারকে দিচ্ছেন আল্টিমেটাম, দ্রুতই অন্তবর্তী সরকারকে বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।’ না হলে দাবি আদায়ে রাস্তায় নামবে, এমন কথাও শোনা যাচ্ছে গঠিত রাজনৈতিক দলের নেতাদের মুখে। এতে অন্তবর্তী সরকার একটু হিসাব-নিকাশ করে সামনে এগুচ্ছে। দ্রুত নির্বাচন দিতে বিএনপির নেতারা বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে কথা বললেও অন্তবর্তী সরকার বিএনপির সাথেও এই নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে না। তবে দিন যত সামনে গড়াচ্ছে, ততই নানানভাবে বিভিন্ন মহল থেকে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হচ্ছে। তাতে কি মনে হয় বিএনপির পেড়ে উঠবে? বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের বক্তৃতায় মনে হচ্ছে তাদের দাবি না মানলে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে উঠবে। যা দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় ধরনের হুমকি। এজন্য অন্তবর্তী সরকারের উচিত, সব ধরনের বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করা, যাতে প্রতিটি মানুষ অধিকার ও মর্যাদার সঙ্গে জীবন-যাপন করতে পারে। সকল রাজনৈতিক দলেরও উচিত বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে সরকারকে সহযোগিতা করা। রাজনীতিতে সেবা নেওয়ার মন-মানসিকতা পরিহার করে দেশের মানুষকে সেবা দেওয়া। এজন্য সৎভাবে কাজ করা অপরিহার্য। তবে সার্বিকভাবে এমনটি হচ্ছে বলে, সবাই বিশ্বাস করেন না।

আমরা বুঝি গণতন্ত্র হলো মত ও দ্বিমত থাকার অধিকার। সেটা খুনখারাবি, দখল, নৈরাজ্য সৃষ্টি করা নয়। লক্ষ হওয়া উচিত, সবার মতামতকে সম্মান করা এবং মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও একে অপরের সঙ্গে মনের ভাব প্রকাশ করা। এজন্য একে অপরের সঙ্গে মিশতে হবে, শুনতে হবে কথা। প্রতিহিংসার রাজনীতির খাতায় নাম না লিখে সেক্রিফাইস কম্প্রোমাইজ করতে জানতে হবে, থাকতে হবে ঐক্যবদ্ধ। তাহলেই দেশে সীমাহীন অরাজকতা, খুন, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতিসহ নানান অপকর্ম বন্ধ হবে। ভালো থাকবে আটষট্টি হাজার গ্রাম বাংলার মানুষ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

একই রকম সংবাদ
© সকল স্বত্ব দৈনিক ঘোষণা অনলাইন ভার্শন কর্তৃক সংরক্ষিত
Site Customized By NewsTech.Com