ইসমাইল হোসেন সিরাজী: রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানে বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা দেশের গণতন্ত্র বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।তিনি বলেন, দএ ধরনের ঘটনা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য, আগামী দিনে গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই জন্য কেউ কেউ হয়তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে পারে। বিশেষ করে এ ঘটনায় বিশৃঙ্খলায় প্রতিবেশি রাষ্ট্রের কোনো হস্তক্ষেপ-ইন্ধন আছে কি না, তাও তদন্ত করতে হবে।‘ ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ‘ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্বাধীনতা ফোরাম নামে একটি সংগঠন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঘটনায় সরকারের কি ভূমিকা ছিল, সেটিও জানা দরকার মন্তব্য করে হাফিজ বলেন, দআমাদের কাছে এখন কোনো তথ্য নেই। সুতরাং আর অল্প কিছু সময় আমরা অপেক্ষা করব। আজকের দিনের মধ্যেই আশা করি সব কিছু পরিষ্কার হবে।‘ কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কারা এর জন্য দায়ী, তখন সকল পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেলে, আমরা এই সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে মনোভাব মিডিয়ার সামনে জনগণের সামনে প্রকাশিত করব।‘ বিশৃঙ্খলা দূর করতে নির্বাচন প্রয়োজন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘ছাত্ররা যদি কোনো নতুন রাজনৈতিক দল বানায়, আমরা তাকে স্বাগতম জানাই। জনগণের কাছে আরো একটি চয়েজ বাড়ল। যেদিনই নির্বাচন হবে নিশ্চয়ই সব রাজনৈতিক দল সেখানে অংশগ্রহণ করবে।‘ আমরা অবশ্যই মনে করি, এবছরই পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। এবং বর্তমান সরকারকে আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি যত রকমের বিশৃঙ্খলা, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা যত ধরনের অনুষঙ্গ, গণতন্ত্রের বিরোধীদের আভাস আমরা পাচ্ছি, এগুলো দূর করতে হলে অবিলম্বে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন।‘ হাফিজ আরও বলেন, ‘কুখ্যাত ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ বিএনপি ও ছাত্রদের আন্দোলনকে দমন করার জন্য পেশি শক্তির বারংবার ব্যবহার করেছে। অনেকে ভুলে গেছেন, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায়, টঙ্গীর পাশেই কিভাবে ১৫ জন সাধারণ মানুষ হত্যা করে ভ্যানে শুইয়ে রেখে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কল্পনা করা যায়? রাজপথে ন্যায্য দাবি করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় সাহায্যে জ্বালিয়ে দেওয়া আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা এর অবসান চাই। অবসান হতে পারে একমাত্র গণতন্ত্রের মাধ্যমে।‘ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘আজকে নানা ধরণের সংস্কারকে পূর্ব শর্ত দেয়া হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়। সংবিধান সংস্কারের কথা বলেছেন, একটি গ্রুপ বলেছেন ৭২ এর সংবিধানকে ছুড়ে ফেলা হবে। তারা ছুড়ে ফেলার কে? অনেক রক্তের বিনিময়ে জিয়াউর রহমান এবং ছাত্র জনতার মিলিত সংগ্রামের ফলে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি।‘
৭২ এর সংবিধান একটি চমৎকার সংবিধান। এটি আওয়ামী লীগের সংবিধান নয়, এটি জনতার সংবিধান। আওয়ামী লীগ কাটাছেঁড়া করে এর অঙ্গহানি ঘটিয়েছে। প্রয়োজন হলে আরো সংবিধানে আরো সংযোজন করা যায়। নতুন করে সংবিধান লেখা হবে না সংশোধন হবে সেই সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ।‘
তিনি বলেন, ‘কোনো বুদ্ধিজীবী, কারো কোনো গুরু বা কোনো সৌখিন রাজনীতিবিদ বা বিদেশ থেকে আগত কোনো বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে সংবিধান নতুন করে লেখা বা সংশোধন করা যাবে না।‘
সংবিধান সংযোজন বা সংশোধন একমাত্র অধিকার রাখে স্বাধীন পার্লামেন্ট। নিরপেক্ষভাবে একটি পার্লামেন্ট। যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, আমরা এখনো তা পুরোপুরি দেখিনি, আমরা এই সংস্কারের প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিএনপি সর্বোচ্চ পর্যায়ে মনোভাব জানাবে।‘
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী, স্বাধীনতা ফোরামের সহ-সভাপতি মোঃ বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply