মো: নুরুল আমিন, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দু:স্থদের সহায়তায় সৌদি সরকারের দেয়া কোরবানির গোস্ত প্রকৃত গরীবদের না দিয়ে নিজের বন্ধু-বান্ধব ও প্রভাবশালীদের মাঝে বিতরন করলেন পিআইও। সরকারী নির্দেশিকা অনুসরন না করে দু:স্থদের জন্য বরাদ্দকৃত কোরবানীর গোস্ত বন্ধু-বান্ধব ও প্রভাবশালীদের মাঝে বিতরন করার খবর সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। পিআইও অফিস সূত্রের দাবী, মানবিক সহায়তা নির্দেশিকা অনুসরন করেই এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরন করা হয়েছে রাজকীয় সৌদি আরব সরকার কর্তৃক প্রেরিত কোরবানীর গোস্ত। তবে বিতরন সংক্রান্ত কোন তালিকা দেখাতে পারেনি পিআইও অফিস। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে দু:স্থদের মাঝে বিতরনের নিমিত্তে সৌদি সরকার কর্তৃক ২১৪ কার্টুন কোরবানীর গোস্ত বরাদ্দ দেয়া হয় পটুয়াখালী জেলার ৮টি উপজেলায়। কলাপাড়া উপজেলায় উপ-বরাদ্দ পায় ৩৩ কার্টুন। প্রতি কার্টুনে ১০ প্যাকেট ও প্রতি প্যাকেটে ২ কেজি করে মোট বরাদ্দের পরিমান ৬৬০ কেজি। যা নির্দেশিকা অনুযায়ী দু:স্থ, অতিদরিদ্র পরিবার, ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণ করার কথা। প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ৯ডিসেম্বর মধ্যরাতে এ গোস্ত মানবিক সহায়তা নির্দেশিকা অনুসরন ছাড়াই সিপিপি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিতরন করেন সদ্য যোগদানকৃত পিআইও মো. মোকসেদুল আলম। সারা বাংলা এসএসসি ৯৭ ব্যাচের বন্ধুদেরসহ কতিপয় সাংবাদিক ও প্রভাবশালীদের মাঝে গোস্ত বিতরণ করা হয়। এসময় গোস্ত নিয়ে তার সাথে বাক বিতন্ডাও হয় দু’একজন প্রভাবশালীর। কলাপাড়া পৌরশহরের এতিমখানা হাফিজিয়া মাদ্রাসার দায়িত্বপ্রাপ্ত মাওলানা মো. মুসা জানান, সোমবার রাতে তাকে পিআইও অফিস থেকে গোস্ত নিতে বলেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সম্পাদক। পরে মাদ্রাসার একজন শিক্ষককে পাঠালে তিন প্যাকেট গোস্ত দেয়া হয় তার কাছে। এসএসসি সারা বাংলা ৯৭ ব্যাচের পিআইও’র বন্ধুদের একজন বলেন, ’২০২২ সালে কুয়াকাটায় সারা বাংলা গ্রুপের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে পিআইও’র সাথে তার পরিচয় হয়। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে এক প্যাকেট গোস্ত দেন সিপিপি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। তখন ইউএনও অফিসের কর্মচারীসহ কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন।এরকম একটি সাংবাদ সোসাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হইলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাপর সৃষ্টি হয়।বিষটি সম্পর্কে জানার জন্য পিআইও কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে পিআইওকে অফিসে পাওয়া যায়নি। অফিস সহকারী মো. হাফিজ জানান, যথাযথ ভাবে দুম্বার গোস্ত বিতরন করা হয়েছে। এসময় বিতরনের তালিকা দেখতে চাইলে অফিসে তার কাছে তালিকা নেই বলে জানান তিনি। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কলাপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি ও কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শামসুল আলম বলেন, ’মধ্যরাতে দু:স্থদের বরাদ্দের দুম্বার গোস্ত পিআইও তার বন্ধু ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের দিয়েছেন। এটি কোনভাবেই সঠিক হয়নি। এনিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সংক্ষুব্দ হয়েছেন।কলাপাড়ায় সদ্য যোগদানকৃত পিআইও মো. মোকসেদুল আলম বলেন, ’তিনি চলমান উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শনে ফিল্ডে ছিলেন।’ জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বলেন, ’তিনি এখনও বিতরন তালিকা পাননি। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন।
Leave a Reply