আবু নাঈম, বোয়ালখালী চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে রোপা আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। ক্ষেত থেকে সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা, তাদের হাতে যেন দম ফেলার ফুরসৎ নেই। সকাল থেকে ধান কেটে ঘরে তুলতে যেন সন্ধ্যা গড়িয়ে আঁধার নেমে আসছে। অসচ্ছলতার কবল থেকে রক্ষা পেতে দিনরাত পরিশ্রম চলছে তাদের।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়নের জৈষ্টপুরা, এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, দিগন্ত জুড়ে আমন ধানের মনকাড়া সোনালী রঙের অপরূপ সৌন্দর্য্য নজর কাড়ছে যে কারোই। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকেরা খুশি।
এবার এ অঞ্চলে আগাম জাতের ব্রি ধান ৪৭-৪৯, সাদা পাই জাম ও কাটারী ধানের চাষ হয়েছে। এসব ফসলই এখন ঘরে তুলছেন কৃষক। এবার আগাম জাতের ধান বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন চাষিরা।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি ৪০ শতকে এবার আমন ধান চাষে খচর পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। জ্যৈষ্ঠপুরা গ্রামের কৃষক স্বপন চৌধুরী বলেন, এক একর ৬০ শতক জমিতে কাটারি এবং ৪৯ জাতের ধান চাষ করেন। প্রতি ৪০ শতকে কাটারি হয়েছে ১৫ মণ। ৪৯ জাতের ধান ১৬-১৮ মণ উৎপাদন হয়েছে।
সন্তোষ চৌধুরী ও লিংকন দে জানান, এ বছর সার, কীটনাশক, ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমন ধান উৎপাদনে খরচও হয়েছে বেশি। তবে বাজারে ধানের ভালো দাম রয়েছে।
জ্যৈষ্ঠপুরা গ্রামের সূর্যব্রত বিল ও বনা বিল ঘুরে দেখা যায়, জমিতে আমন ধান কেটে আঁটি করে বাড়ির উঠোনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অনেকেই আবার জমিতেই ধান মাড়াই করছেন। আমন ধান ঘরে তোলাকে কেন্দ্র করে কৃষকদের মনে বিরাজ করছে যেন উৎসব। তাছাড়া এখন বাজারে ধানের দাম বেশি। তাই এবার লোকসান হওয়ার আশঙ্কা নেই। কৃষকরা আমন ধান তোলার পর জমিতে শীতকালীন শাকসবজি ও ডাল জাতীয় ফসল আবাদ করবেন বলে জানা গেছে। অনেকে সবজি চাষের জন্য প্রস্তুত করছেন জমি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালখালীতে এবার ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অতি বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কয়েকটি এলাকায় আমন ধানের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরও আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে।
উপজলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ বলেন, এ এলাকার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ভালো ফলন হওয়ায় ধান চাষে আগ্রহী এ অঞ্চলের কৃষকরা।
Leave a Reply