সাহিদুর রহমান টেপা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর ইউটিউব চ্যানেলগুলো অনেক আগে থেকেই গুজব আর অপপ্রচারের কারখানায় পরিণত হয়েছে। পাঁচই অগাষ্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর যদিও অল্প কিছুদিনের জন্যে অন্তত দেশবিরোধী অপপ্রচার কিছুটা হলেও কমে যায় কিন্তু গত বেশ কয়েক সপ্তাহ থেকে আবারও ওই একই অপশক্তি নতুনভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ওদের টার্গেট এবার দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। প্রায় প্রতিদিনই কিছু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রমাগত দুটো গোয়েন্দা সংস্থার স্পর্শকাতর গোপনীয় নথিপত্র জনসমক্ষে প্রচার করে কৌশলে বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। দেশের একজন বিবেকসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে আমার প্রশ্ন, এভাবে দিনের-পর-দিন কারা এসব স্পর্শকাতর নথি বিতর্কিত লোকদের কাছে পাচার করছে, কি তাদের মতলব। ওরা কি তাহলে কৌশলে এসব অপকর্মের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়? এটাই হয়তো এদের উদ্দেশ্যে।
ইউটিউব চ্যানেলে বহিষ্কৃত সেনা অফিসার মুস্তাফিজুর রহমানের একটা ভিডিও দেখলাম যেখানে তিনি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সম্পর্কে খুবই আপত্তিকর বানোয়াট কিছু তথ্য উপস্থাপন করেছেন। পাশাপাশি বেশ কজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাকেও বিতর্কিত করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা চালিয়েছেন। উল্লেখ্য, গুলশানে হলি আর্টিজান রেষ্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার পর মুস্তাফিজুর রহমানের সাথে ইসলামিক স্টেট সংশ্লিষ্টতা এবং হলি আর্টিজান ঘটনার সাথে ওনার সম্পৃক্ততার তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এলে তিনি গোপনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আমেরিকায় আশ্রয় নেন। এই বহিষ্কৃত সেনা অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। এমন এক বিতর্কিত লোক আমাদের দেশ প্রেমিক সেনা বাহিনী এবং খোদ সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন তা শুধু নিন্দনীয়ই নয় বরং ভয়াবহ অপরাধ।
ভিডিওটায় মুস্তাফিজুর রহমান বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সেনা অফিসারের নাম উল্লেখ করে দাবী করেছেন ওনাদের সাথে নাকি তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ আছে। মুস্তাফিজ এমন কথাও বলেছেন, সেনা বাহিনীর অভ্যন্তরের অনেক গোপন তথ্যও নাকি তিনি জানতে পারেন। এক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন, মুস্তাফিজুর রহমানের সাথে আদতেই কি কারো যোগাযোগ আছে, নাকি ওনার এসব দাবী একেবারেই ভিত্তিহীন। যদি সত্যিই মুস্তাফিজুর রহমানের সাথে কারো যোগাযোগ থেকে তাহলে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষে কি এসব বিস্তারিতভাবে উদঘাটন করা অসম্ভব?
বহিষ্কৃত সেনা অফিসার মুস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে যেহেতু জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংশ্লিষ্টতা অভিযোগ আছে তাই এটা আন্দাজ করাই যায় ওসব অপশক্তিই তাকে দিয়ে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনা বাহিনী এবং সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ওদের কোনো অশুভ মতলব আছে। এবিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
সাহিদুর রহমান টেপা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সমাজকর্মী এবং দৈনিক ঘোষণা’র প্রকাশক ও সম্পাদক
Leave a Reply