সাভার উপজেলা প্রতিনিধিঃ ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন আউকপাড়া মৌজায় ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত বিশ (২০) একর সম্পত্তি বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায় ২০০৫ সালে কোর্ট অব ওয়ার্ডসঃ ঢাকা নবাব এস্টেটের মালিকানাধীন আউকপাড়া মৌজার ২০ (বিশ) একর সম্পত্তি ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর তৎকালীন সহ সভাপতি আইয়ূব আলী শিকদার সহ সমিতির সদস্যদের নামে কৃষি ও খামার প্রকল্প স্থাপনের জন্য নবায়ন ভিত্তিক একসনা লীজ প্রদান করা হয়।
লীজ প্রাপ্তির পর ন্যাশনালের পক্ষে কোর্ট অব ওয়ার্ডসের ম্যাজিষ্ট্রেট দ্বারা বুঝিয়ে দেওয়া চৌহর্দ্দী মোতাবেক সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ফলজ-বনজ গাছ রোপন, ঘরবাড়ী ও কৃষি খামার করে লীজশর্ত পূরন করে সদস্যরা শান্তিপূর্নভাবে বসবাস করতে থাকেন পরিতাপের বিষয়, তৎকালীন সহ-সভাপতি আইয়ূব আলী ও সম্পাদক মোশতাক গং এর লীজ শর্ত লঙ্গনের দায়ে ন্যাশনালের লীজ ২০০৮ সনে বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠানের নয় মর্মে সমিতির পক্ষে আবেদনের ফলে ২০১৩ সালে স্থায়ী বসতির জন্য নবায়ন ভিত্তক একসনা আবাসিক অনুমোদন পায় ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্য গং।
সমিতির সাধারন সভায় নানা অনিয়ম দুর্নীতির দায়ে সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী শিকদার, মোতাহার হোসেন, ও মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক গংকে পর পর দু’বার বহিষ্কার ও পূনঃ বহাল করা হলেও ২০১৭ সনে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবয় সমতি লিঃ এর কার্যকরী পরিষদ।
এরপর নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির ধারাবাহিকতায় উক্ত সম্পত্তি আইয়ুব আলী সিকদার নবাব এস্টেটের কিছু অসাধু কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ/ সহযোগিতায় ন্যাশনালের বৈধ সদস্যদের বাদ দিয়ে
ভুয়া সভাপতি/ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেজে লীজি মালিক দাবি করে। নবাব এস্টেটের সহকারী ম্যানেজার ইয়াসির আরাফাত ও সিনিয়র সহকারী ম্যানাজার সাব্বির হোসেন মিলে অবৈধ সদস্য বানিয়ে লীজ নবায়ন রশিদ প্রদানের মাধ্যমে উক্ত সরকারি সম্পত্তি প্লট আকারে বিক্রয় করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
আইয়ুব আলী সিকদার ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সদস্য বানিয়ে যে তালিকা তৈরি করেছে তাদের নামের তালিকা সমবায় মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ অডিটের সদস্য তালিকায় পাওয়া যায়নি।
অথচ, আইয়ুব আলী শিকদার সরকারি সম্পত্তির জবর দখলকারীদের অবৈধ পন্থায় সদস্য বানিয়ে শতাংশ প্রতি এক থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছে, যা দেখার কেউ নেই।
যাদের অনেকেরই নেই নবাব এস্টেট কর্তৃক বৈধ কোন কাগজপত্র।
মূলতঃ আইয়ূব আলী সমবায় মন্ত্রণালয়ের একজন সরকারী চাকুরে।সরকারের মন্ত্রী এমপির প্রভাব খাটিয়ে শ্রমিক নেতা সেজে অফিস না করেও হাজিরা খাতা সই করে বেতন নেয়া এই ব্যাক্তি একজন বহুমূখী প্রতারক।
জানা যায়, উক্ত সম্পত্তি বিক্রয় করার জন্য আইয়ুব আলী শিকদার একটি আওয়ামী পন্থী সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন বদরুল আলম ওরফে বদ আলম, মজিবর দেওয়ান ওরফে মদ মইজ্যা , আয়নাল ওরফে দালাল আয়নাল, লম্বু হালিম, পিস্তল অপু, কিলার সেলিম, শর্টগান রাজু সহ অনেককে। যাদের কাজ কাস্টমার সংগ্রহ, জমি বিক্রয় ও বৈধ সদস্য উচ্ছেদ করে দখল বুঝিয়ে দেয়া।
শুধু তাই নয় প্রতারক আইয়ুব আলী শিকদার ও তার দুষ্কর্মের অন্যতম সহচর সাভার- আশুলিয়ার আতংক কুটি মোল্লার নিকটজন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েতপুরী সালামের নেতৃত্বে গত (৪ আগস্ট) সরকারি জমিতে থাকা প্রায় ৯৬ টি আকাশী কাঠ গাছ কেটে বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা ভাগাভাগি করে নেয় এই ভূমি সন্ত্রাসী গং।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় উক্ত ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতির বৈধ সভাপতি আ,ন,ম,মজিবুল্লাহ নাসের। ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর বর্তমান কমিটি ও সদস্য তালিকায় আইয়ুব আলী সিকদারের কোন নাম নেই। অথচ, আইয়ূব আলর নিজেকে ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি দাবি করছেন।
আইয়ুব আলী সিকদার সদস্য থাকা অবস্থায় তার নামে বরাদ্দকৃত একটি ডিসিআর থাকলেও সে তাও বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও জানা যায়।
আইয়ুব আলী সিকদার সহ নবাব এস্টেটের কিছু কর্মকর্তারা সরকারি সম্পতি বেহাত করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। নীরব ভূমিকায় রয়েছে নবাব এস্টেট কর্তৃপক্ষ তথা ভূমি সংস্কার বোর্ড।
সরকারী সম্পত্তি বিক্রয় করা বা সরকারী গাছ কর্তন করা যাবেনা যদি কেউ এই অপরাধ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা।- প্রশ্নের এমনই বক্তব্য দেন নবাব এস্টেটের ম্যানেজার জনাব মোহাম্মদ হোসেন।
অথচ, তদন্ত রিপোর্ট ও নানা বাহানায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াতো দুরের কথা তাদের সাথে চলছে গোপন মিটিং।
সরকারি সম্পত্তি ও গাছ বিক্রিতে এলাকার সাধারন জনগন বাঁধা দিলে ৪-৫ আগষ্ট বাইপাইল ও নবীনগর এলাকায় সাইফুল ইসলামের পক্ষে ছাত্র জনতার উপর প্রকাশ্য গুলিবর্ষণকারী ও আইয়ূব আলীর ক্যাডার মোঃ বদরুল আলম ওরফে বদ আলম, মোঃ কবির হোসেন, মোঃ মতিউর রহমান ও সালামসহ অজ্ঞাত ৮/১০ জনের নামে আশুলিয়া থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। অনুসন্ধানে জানা যায়, তার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এ বিষয়ে ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবয় সমিতি লিঃ সভাপতি আ,ন,ম মজিবুল্লাহ নাসিরের সাথে কথা বললে তিনি জানান, সমিতির সদস্য তালিকায় বদরুল আলম নামে কেউ নাই।
এলাকাবাসী জানান, যদি উক্ত সম্পত্তি ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর নামে লিজ হয়ে থাকে তাহলে উক্ত সম্পত্তির মালিক হবে সমিতির বৈধ সদস্যগণ। তাহলে, আইয়ূব ও বদ আলম গং এরা কারা?
Leave a Reply