মোঃ আফ্ফান হোসাইন আজমীর, রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের বজুরুক মহদিপুরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এবিষয়ে অপপ্রচারের শিকার সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জন বদরুদ্দোজা মাহমুদ মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,উপজেলার বুজুরুক মহাদিপুর গ্রামের মাহবুল আলম বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য ও স্থানীয় নেতা। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর সমর্থনে নির্বাচনে অংশগ্রহণমূলক করতে বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত পীরগঞ্জ ৬ আসনে ডাব প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।দীর্ঘদিন থেকে স্পিকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী মত দমন ও এলাকায় দাদনের ব্যবসার মাধ্যমে শতাধিক ব্যক্তিকে সর্বস্বান্ত করার অভিযোগ রয়েছে আওয়ামীলীগের এই নেতার বিরুদ্ধে।গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কটুক্তি করায় অপরিচিত কিছু ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে মহদিপুর গ্রামে অবস্থিত মাহাবুল আলমের বাগানবাড়িতে হামলা করে একটি প্রাইভেটকার পুড়িয়ে দেয়।পূর্বের রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে এই ঘটনার জন্য আওয়ামীলীগ নেতা স্থানীয় অবসর প্রাপ্ত সার্জনকে দায়ী করে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে এবং গত ২০ আগস্ট আবারো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ,মারপিট ও মিথ্যা মামলার হুমকি দেয়ায় সাবেক সেনা সদস্য বদরুদ্দোজা মাহমুদ বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
স্থানীয় আবিদ হাসান জানান,গত ৫ তারিখে এশার নামাযের পর কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে অপরিচিত কিছু ছেলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতার বাগানবাড়িতে হামলা হয়।এসময় বাগানের মধ্যে হট্টগোল শুনে বদরুদ্দোজাসহ এলাকার কিছু মানুষ হামলাকারীদের বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করে। এই সুযোগে বাগানের কেয়ারটেকার মাজেদুল ইসলাম প্রাইভেট কারটির সঙ্গে দাঁড় করানো নিজের মোটরসাইকেলটি সরিয়ে প্রাইভেটকারে আগুন লাগিয়ে দিয়ে বাগান থেকে পালিয়ে যায় স্থানীয় অনেকের সামনেই।
অভিযোগের বিষয়ে বদরুদ্দোজা মাহমুদ জানান, মাহবুল আলমের বাগানে অপরিচিত কিছু লোক হামলা চালিয়েছিলো রাজনৈতিক কারণে। নিজেকে বাঁচানোর তাগিদে বাগানের কেয়ারটেকার মাজেদুল নিজেই প্রাইভেটকারে আগুন ধরিয়েছিলো যা এলাকার অনেকেই দেখেছে। কিন্তু পূর্বতন শত্রুতার জেরে সে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে ও আমাকে প্রতিনিয়ত মারপিট করার হুমকি দিতেছে।আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই।
এ বিষয়ে মাহবুল আলম জানান, আমি কোন রাজনীতি করি নাহ। পীরগঞ্জের কিছু বন্ধু আমাকে জোর করে ভোটে দাড়িয়ে দিয়েছিলো।দাদন ব্যবসার সঙ্গেও আমি জড়িত নাহ।তবে টাকার প্রয়োজনে অনেকে আমার কাছে জমি বন্ধক রেখেছে। আমার প্রাইভেট কার বদরুদ্দোজার নেতৃত্বে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।আমি রাজনীতি করবো জন্য ওরা হামলা করবে। আমি ন্যায্য বিচার চাই।
মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন জানান,মাহবুলের সঙ্গে বদরুদ্দোজার রাজনৈতিক বিষয়ে পূর্ব থেকেই শত্রুতা ছিলো। গত ৫ তারিখে অপরিচিত কিছু লোক রাজনৈতিক কারণে মাহবুলের বাগানবাড়িতে হামলার ঘটনা জানার সঙ্গেই সার্বিক বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়েছি ও লোকজন পাঠিয়ে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলাম।
মিঠাপুকুর থানার ওসি (তদন্ত) নূর আলম জানান, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply