মুহাঃ মোশাররফ হোসেন, মনিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ
মনিরামপুর উপজেলার কোমলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা বেলি রানী পাল কে পরকীয়া কর্মকান্ডে জড়িত থাকার কারনে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। জানা যায়, কোমলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রানী বেলি পাল ঈদের ছুটির সময় সাবেক প্রেমিকের সাথে ঘুরতে যায় চূকনগর বাজারের ভরতবায়না নামক স্হানে। এই সংবাদ পেয়ে বেলি রানী পালের স্বামী রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উত্তম কুমার পাল ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে নিজের স্ত্রীর প্রেমিককে মারধর করে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। এই ঘটনাটি দ্রুত লোকমুখে ছড়িয়ে পরে এবং মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। যার কারনে এলাকায় স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়ে ও জনসাধারণের মাঝে একটা আলোচনা সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়। স্কুল শিক্ষিকার পরকীয়া প্রেম ভাইরাল হবার পরে এলাকার মানুষ বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শিক্ষক-শিক্ষিকারা জাতির মেরুদন্ড , মানুষ তৈরির কারিগর হয়ে যদি এরকম অশ্লীল অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়াতে পারে তবে তাদের দ্বারা কি শিক্ষা নিবে কোমলমতি শিশুরা। এসব ঘটনা জানতে পেরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মতিয়ার রহমান ঐ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। যার পরিপেক্ষিতে ২৭জুন সভাপতি মহদয় জরুরী মিটিং ডেকে অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষিকা বেলী রানী পালকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বহিস্কার করেন এবং ৩ সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যো রিপোর্ট তৈরী করে সভাপতির নিকট জমা দেবার কথা বলা হয়। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দেবার পর ১৪ জুলাই বিদ্যালয়ে সভাপতি ম্যানেজিং কমিটির এক জরুরি মিটিং ডাকেন। উক্ত মিটিংয়ে কোন সিদ্বান্ত না হওয়ায় শিক্ষিকা বেলী রানী পালের অনির্দিষ্ট কালের জন্য বহিষ্কার অব্যাহত আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কোমলমতি শিশুরা এই স্কুলে পড়াশোনা করতে আসে, কিন্তু শিক্ষিকার এরকম অশ্লীল কর্মকান্ডে আমরা শঙ্কিত, কি শিক্ষা নিবে আমাদের বাচ্চারা, এই সকল ঘটনার এলাকার সাধারণ জনগণ স্কুল স্থলে এসে ঐ শিক্ষীকার স্কুল থেকে বরখাস্ত ও চাকুরী থেকে অপসারণের জন্য প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির উপরে চাপ প্রয়োগ করেন। এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুল গফুর বলেন, আমার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা বেলি রানী পালের চরিত্র তেমন ভালো না। এক জন শিক্ষিকা হিসেবে যে গুন থাকার কথা তার মধ্যে নেই । আমি বিদ্যালয়ে সভাপতি হওয়ার পর থেকে এই শিক্ষিকার নামে বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ এসেছে। এর আগেও এমন একটি কান্ড সে ঘটিয়েছিল। এবার যেহেতু বিষয়টা গুরুতর এবং ভাইরাল সে কারণে আমি ম্যানেজিং কমিটির এক সভা আয়োজন করে সেই সভায় ম্যানেজিং কমিটির সকলের মতামতের ভিত্তিতে বেলি রানী পাল কে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করেছি । এছাড়াও তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে ৷ তাদের রিপোর্টের পেক্ষিতে আগামী মিটিংয়ে সকলের মতামতের ভিত্তিতে আইনগত ভাবে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে ৷ এ দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, সহকারী শিক্ষিকা বেলি রানী পাল যে কাজটি করেছে সেটি মোটেই ভালো না। ঘটনাটি যদিও স্কুল চলাকালীন সময়ে না, স্কুল বন্ধের সময় ঘটেছে। এই বিষয়টি স্কুল খোলার পরে বেশি জানাজানি হয়েছে। যার ফলে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। যার প্রেক্ষিতে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেলী রানী পালকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
Leave a Reply