নিজস্ব প্রতিবেদক: একসময় যিনি রিকশাচালক ছিলেন তিনিই এখন ঢাকার শীর্ষ চাঁদাবাজ সোহরাব এবং রুবেল। আইন-আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বছরের পর বছর অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশার টোকেন চাঁদাবাজি বাণিজ্য করছেন। যার মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছেন সোহরাব এবং রুবেল।
এই ব্যক্তির নাম মো. সোহরাব(৪৫) পিতা- হোসেন আলী, জন্মস্থান কিশোরগঞ্জ গোবিন্দপুর এলাকায়,
রাজধানীর লালবাগ এলাকার বাসিন্দা তিনি, সোহরাবের এবং রুবেলের ছত্রছায়ায় ঢাকার কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, বংশাল ,কোতুয়ালি চকবাজার, বাবুবাজার এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার নিষিদ্ধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এতে নিয়মিত প্রাণহানীর মত ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয়রা বলছেন, রাজনৈতিক ও কিছু অসাধু পুলিশ নামধারী কিছু সাংবাদিকদের মদদে সোহরাব এবং রুবেলের সিন্ডিকেট অবৈধ অটোরিকশার টোকেন বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
সোহরাবের সহযোগী (রুবেল হোসেন) পেশায় ছিলেন পুলিশের ইনফর্মা, কিছু অসাধু পুলিশের বড় বড় কর্মকর্তা সাথে পরিচয়ের পাশাপাশি তাঁদের কে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে চাঁদাবাজি এবং আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালানকারী ব্যবসা প্ররিচালনা করে, প্রতি মাসে ১বা ২ দুবাইয়ে যাওয়া আসা করেন রুবেল। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শক্ত ভাবে গড়ে ওঠে প্রশাসনিক একটি সিন্ডিকেট,ঐ উছিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ প্রটোকল SSF এর এক জন মেজর প্রতিমাসে ১০ লাখ টাকা নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছেন সোহরাব এবং রুবেলের অটোরিকশা টোকেন চাঁদাবাজি ব্যবসা, এবং স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসা থেকে ঐ SSF এর কর্মকর্তা প্রতিমাসে ৫০ লাখ টাকা নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছে।
ট্রাফিক পুলিশের ডিসি থেকে শুরু করে থানার ওসি পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে SSF ঐ কর্মকর্তা।
প্রতি মাসে ১১ হাজার রিকশা চালকের মাঝে কার্ড বিক্রি করে। টোকেন কার্ড প্রতি নেন ২-৩ হাজার টাকা। এতে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।
সোহরাবের কার্ড দেখলে ট্রাফিক পুলিশ সংশ্লিষ্ট রিকশা আটকান না বলে জানিয়েছেন চালকরা।
আর যেই রিকশায় সোহরাবের কার্ড থাকে না সেই গাড়ি ধরে ডাম্পিং করে ট্রাফিক পুলিশ। স্থানীয়রা বলেছেন সোহরাবের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট পুরান ঢাকার এলাকাবাসী।
তার বিরুদ্ধে হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর ও লালবাগ থানায় একাধিক ফোজদারী মামলা রয়েছে। সম্প্রতি চাঁদাবাজির মামলায় জেলও খেটেছেন তিনি। জামিনে বের হয়েই পুনরায় শুরু করেন চাঁদাবাজি টোকেন ব্যবসা।
রিকশা চালকরা জানান, ২০০২, ২০০৩ সালের দিকে লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর এলাকায় রিকশাচালক ছিলেন সোহরাব।কিশোরগঞ্জ জন্মস্থান হয়ার সুবাধে প্রকাশ্যে সেসময় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন,সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সাহেবের পিএস পরিচয়দান কারী শাহাবাগ ফুল ব্যবসায়ী, ফুল মার্কেটের সাবেক সভাপতি মোঃ আজিজ সাহেবের ক্ষমতার উপরে ভর করে চাঁদাবাজি ব্যবসা শুরু করে সোহরাব। আজিজ সাহেবের হাত ধরে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতি ঢাকা’র বিশেষ সাধারণ সভা,বনভোজন ও মিলনমেলা-২০২৩শে,অংশগ্রহণ করেন ৭ লাখ টাকা দিয়ে আজিজ সাহেব কে।
মানবিকতার উদার মনের মানুষ বাংলাদেশ পুলিশের উজ্জ্বল নক্ষত্র, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান, ডিআইজি জনাব হারুন অর রশিদ সাহেবের সাথে ছবি তুলে নিরীহ অটো রিক্সাচালক ও মালিকদেরকে ভয় ভীতি দেখিয়ে বেড়ায় চাঁদাবাজ সোহরাব, এমনকি কিশোরগঞ্জের আরেক কৃতি সন্তান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কৃষিবিদ জনাব মশিউর রহমান হুমায়ুন সাহেবের সাথে ছবি তুলে ফেইসবুক বাজি করে,রিক্সা মালিক চালক সবাইকে ভয় ভীতি দেখায় তার হাত কত লম্বা।
আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে নিজেই ছোটখাটো নেতা বনে যায় ক্ষমতার দাপটে গড়ে তোলেন অবৈধ অটোরিকশার টোকেন বাণিজ্য। চালু করেন কার্ড বাণিজ্য। এভাবে রিকশা চালক থেকে সোহরাব বনে যান বড় টোকেন ব্যবসায়ী। চাঁদার টাকায় গড়ে তোলেন আলিশান বাড়ি কিশোরগঞ্জ গোবিন্দু পুরে গ্রামে, এমনকি ২ টি বিয়েও করেন সোহরাব।
চালকরা জানান,
সোহরাব নামের এক ব্যক্তির কাছে থেকে কার্ড নিতে নিতে হবে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের লোগো নৌকা ব্যবহার করে, ইলিশ, বাঘ, আম, কাঁঠাল, আনারস, আপেল, হরিনের ছবিযুক্ত এসব কার্ড দেখালেই অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালককে ছেড়ে দেন ট্রাফিক পুলিশ,
একটি কার্ডের মূল্য ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা।
আবার প্রতি মাসে তা রিনিউ করতে হয় সমপরিমাণ টাকা দিয়ে। যখন-তখন, যেখানে-সেখানে পার্কিং, বেপরোয়া চলাচল এবং খারাপ আচরণ সবই করে বেপরোয়া এসব অটো চালকরা। এতে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনাও ঘটে।
রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার অলিগলিতে দিনকে দিন বেড়েই চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা। রাজধানীর পুরান ঢাকা, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, মাদারটেক, নন্দীপাড়া, বাসাবো, মুগদা, কদমতলা, বৌদ্ধমন্দির, বনশ্রী এলাকায় এই হার সবচেয়ে বেশি। মূলত জনসাধারণের সহজ ও কম ভাড়ায় যাতায়াতে সুবিধা দিয়ে থাকে এ অবৈধ যানটি। এ কারণে জনসাধারণ বিরক্ত হলেও কিছু বলতে চায় না। বেআইনি যানটি পুলিশি বৈধতা নিয়ে টিকে আছে রাজধানীহ সারা দেশে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হয়, তার ২০ শতাংশই ঘটে ব্যাটারিচালিত রিকশায়। সারা দেশে দিনে অন্তত এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পেছনে।
যেভাবে চলে এসব কার্ড বাণিজ্য
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মুসা বলেন, প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা দিতে হয় সোহরাব নামের এক ব্যক্তিকে। বিনিময়ে রিকশায় লাগিয়ে দেওয়া হয় একটি মার্কাযুক্ত কার্ড। এ কার্ডের মেয়াদ এক মাস। কার্ড থাকলে পুলিশ তাদের কিছু বলে না। না থাকলে গাড়ি রেকার দিতে হয় নয়তো ডাম্পিং করে দিলে সেখান থেকে গাড়ি আনতে তিন -চার হাজার টাকা লাগে।
আরেক অটোরিকশা চালক হাসান উদ্দিন বলেন, সোহরাব ভাই প্রতিটি গ্যারেজের মালিকের কাছে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি কার্ড দিয়ে এসব ব্যাটারি রিকশা নিয়ন্ত্রণ করে। একেক কার্ডে একেকরকম সাংকেতিক চিহ্ন থাকে। যা থেকে বোঝা যায় এ রিকশা কোনো ব্যক্তির অধীনে। একেকটি গ্যারেজে সর্বনিম্ন ১০০টি ব্যাটারি রিকশা থাকলে প্রতি গ্যারেজ থেকে ৩ লাখ করে টাকা উঠে। আর ২০০ টি গ্যারেজ থেকে যা উঠে তা দিয়ে তো হয়েই যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ট্রাফিক লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার আসমা সিদ্দিকা মিলি বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা ও থ্রি-হুইলার অটোরিকশা নিষিদ্ধ। ফাঁক-ফোকর দিয়ে চলাচল করে। সোহরাব নামের এক ব্যক্তি এসব কাজ করছেন বলে আমি জানতে পেরেছি। আমার জানা মতে কোনো পুলিশ সদস্য এর সঙ্গে জড়িত নয়। তবে প্রমাণ মিললে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যোগাযোগ খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা দেশে কমপক্ষে ৩০ লাখ এমন পরিবহন চলছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে সোহরাবকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
Leave a Reply