শাহাদাৎ হোসেন সরকার: গাজীপুরের কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ সাতবাড়ী এলাকায় বিয়ের কাবিননামা চাওয়ায় তামান্না খাতুন নামের এক নারীকে হাত বেঁধে শারীরিক নির্যাতন ও স্বর্ণালংকার সহ মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মোঃ জাবেদ আলী গং এর বিরুদ্ধে।এবিষয়ে কাশিমপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নারী।
গত বুধবার(১৫ মে)রাত আনুমানিক ৮:৩০ ঘটিকায় দিকে মহানগরীর কাশিমপুরের ৪ নং ওয়ার্ডের সারদাগঞ্জ সাতবাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী তামান্না খাতুন(২৭)শেরপুর জেলার মোবারকপুর গ্রামের মরহুম তমর উদ্দিনের কন্যা। তিনি বর্তমানে কাশিমপুর থানার কাজী মার্কেট এলাকার আব্দুল লতিফ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন,গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ সাতবাড়ী এলাকার মৃত আসমত আলীর ছেলে মোঃ জাবেদ আলী(৪৫),মোঃ ছবেদ আলী(৪২),জাবেদ আলীর পুত্র(২৫)ও জাবেদ আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া রংপুর জেলার রুমি আক্তারসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,ভুক্তভোগী তামান্না খাতুন পূর্বে ১ নং বিবাদী জাবেদ আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলো।গত ১০ মে ২০২৪ তারিখে উক্ত বিবাদীগণ জোরপূর্বক ভাবে জাবেদ আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া নজরুল ইসলামের সাথে স্থানীয় এক মৌলভীর মাধ্যমে তাকে বিবাহ দেন।
পরবর্তীতে বিবাহের কাবিননামা চাওয়ায় তামান্নাকে উক্ত বিবাদীগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে হাত বেধে দেশীয় অস্ত্র রড,কাঠের লাঠি দ্বারা নির্যাতন করে স্বর্নালংকার সহ মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী তামান্না বলেন,আমি কাজের সন্ধানে গাজীপুরের কাশিমপুরে আসি। দীর্ঘদিন কোন কাজকর্ম হয়নি বলে জাবেদ আলি আমাকে নজরুল ইসলামের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করে।
নজরুল ইসলাম সব সময় নেশা করে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকে এবং জুয়া খেলে। এক পর্যায়ে আমি রাজি না হওয়ায় বিবাদীগণ আমার আইডি কার্ড সহ বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে যায়।
এবং আমাকে জোরপূর্বক ভাবে কাবিন ছাড়া স্থানীয় মৌলভী দিয়ে নেশাগ্রস্ত নজরুল ইসলামের সাথে বিবাহ দেন।
বিয়ে হওয়ার পর থেকে নজরুল ইসলাম প্রতি রাত্রে নেশা করে এসে আমাকে মারধর করে আমার উপর নির্যাতন চালায়।
আমি তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অন্যত্র বাসা ভাড়া নিয়ে চলে আসি।পরবর্তীতে তাদের কাছে বিবাহের কাবিননামা ও আমার আইডি কার্ড সহ কাগজপত্র চাওয়ায় তারা আমার সাথে বিভিন্ন তালবাহানা করে হুমকি প্রদান করে।
এক পর্যায়ে ১ নং বিবাদী কাবিননামা ও আইডি কার্ড দেওয়ার কথা বলে গত ১৫ মে রাত আনুমানিক ৮:৩০ মিনিটে আমাকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যায়।সেখানে যাওয়ার পর বিবাদীগন আমার সাথে বিভিন্ন ধরনের খারাপ আচরণ করে।
এক পর্যায়ের বিবাদীরা আমার হাত পিছনে বেঁধে আমার ওপর নির্যাতন চালায়।এবং তারা আমার গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন,কানের এক জোড়া দুল এবং আমার ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেটসহ পায়ের নুপুর ছিনিয়ে নিয়ে যায়, এবং আমাকে মেরে হাত ভেঙ্গে দেয়।
তাদের অত্যাচারে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তারা আমাকে আমার বর্তমান ভাড়া বাসার সামনের রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে আশেপাশের লোকজন আমাকে দেখে চিনতে পেরে আমার অভিভাবকদের খবর দিলে তারা এসে আমাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
এসময় তিনি আরো বলেন,যারা আমার সাথে এধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে এবং আমার উপর শারীরিক নির্যাতনসহ আমার শ্রীলতাহানী করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাবেদ আলীর বাড়ীর ভাড়াটিয়া জানান,তামান্নাকে নিয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও দুঃখজনক ঘটনা।স্থানীয় বাড়িওয়ালারা যদি এধরনের ঘটনা ঘটান তাহলে আমাদের মতন ভাড়াটিয়ারা কোথায় যাবে?আমরা এধরনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কাশিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সানোয়ার জাহান বলেন,এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি।সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply