নিউজ ডেস্ক
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে দলটির মনোনীত প্রার্থীর অনুসারী, কর্মী ও সমর্থকদের সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের আশঙ্কা, গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ৮৮ আসনে সহিংসতা তীব্র হতে পারে। সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য করণীয় ঠিক করতে পুলিশ সুপারদের নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। গতকাল মঙ্গলবার মাসিক অপরাধবিষয়ক সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি।
গত সোমবার পিরোজপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে লালন ফকির নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের সমর্থক। এ ছাড়া সংঘর্ষ হয়েছে বগুড়া, ফরিদপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলায়ও। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার এখনো শুরু হয়নি। তার আগেই সহিংসতার ঘটনা শুরু হয়েছে।
১৮ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মূলত: এর পরপরই শুরু হবে প্রচার কার্যক্রম। পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর সংঘর্ষ বাড়তে পারে। কারণ এখন পর্যন্ত ১৩৩টি আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। সেসব আসনে তীব্র প্রতিযোগিতা হবে। এর মধ্যে অন্তত ৮৮ আসনে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনুসারীদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হতে পারে, এমন আসনগুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা-১৯। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ তৌহিদ জং মুরাদ।
এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-১, নরসিংদী-১, ৩, ৪ ও ৫, মাদারীপুর-৩, পঞ্চগড়-১, ফরিদপুর-১, ২, ৩ ও ৪ আসনেও সংঘাতের শঙ্কা রয়েছে। ফরিদপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহ। সেখানে বর্তমান সংসদ সদস্য যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। এই আসনেও সংঘর্ষের তীব্র আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে বরিশাল-২, ৪ ও ৫, ভোলা-৩ পটুয়াখালী-৪, বরগুনা-২ ও ঝালকাঠি-১ আসনও সংঘাতের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। নৌকার প্রার্থী পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের সঙ্গে তা*র তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে। ইতিমধ্যে দুই পক্ষ একে অপরকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিচ্ছে।
পুলিশের তথ্যমতে, রাজশাহী-১, ৪ (বাগমারা) ও ৬, গাইবান্ধা-৪ ও ৫, টাঙ্গাইল-৩ ও ৫, যশোর-৪, সাতক্ষীরা-১, জামালপুর-৪, কুমিল্লা-৪, মানিকগঞ্জ-২, কিশোরগঞ্জ-২, সুনামগঞ্জ-১, চট্টগ্রাম-১২ এবং নোয়াখালী-১ ও ২ আসনও সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে যেকোনো সময়। এ ছাড়া রংপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি জেলায় সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র: আজকের পত্রিকা