বিনোদন প্রতিবেদক
বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় সুপার স্টার শাকিব খান। বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকাই সিনেমায় রাজত্ব করছেন তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে মৃত্যুপ্রায় এই ইন্ডাস্ট্রি একাই টেনে নিচ্ছেন তিনি। শাকিবের সিনেমা মানেই সুপারহিট এবং প্রযোজক, পরিচালক ও প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের মুখে স্বস্থির হাসি।
তাই তো জনপ্রিয়তার পাশাপাশি বাড়িয়েছেন নিজের পারিশ্রমিক। কয়েক মাস আগেও শাকিবকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করার কথা ভাবলে ৫০ লাখ টাকায় কাজ করা যেত। তবে গেল ঈদের মুক্তিপ্রাপ্ত শাকিব অভিনীত ‘প্রিয়তমা’ সিনেমাটি সুপারহিট হওয়ায় পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন এ নায়ক। এখন শাকিব খানকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে হলে গুনতে হবে এক কোটি টাকা। ৫০ লাখ থেকে শাকিবের পারিশ্রমিক অর্ধেক বেড়ে এখন এক কোটি টাকা।
‘প্রিয়তমা’ সিনেমা নির্মাণের আগে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালক বদিউল আলম খোকন তার নতুন সিনেমা ‘নীল দরিয়া’-তে অভিনয়ের জন্য চূড়ান্ত করেন শাকিব খানকে। সে সময় পারিশ্রমিক বাবদ ৪০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয় শাকিব খানকে। সিনেমার শুটিং শিডিউল ছিল ২০ জুলাই থেকে। তার আগে ফাইট ডিরেক্টর আরমান ও চিত্রগ্রাহক মজনুকে নিয়ে কক্সবাজারের জেলে পল্লিতে লোকেশন দেখে আসেন পরিচালক।
পরিচালক বদিউল আলম তখন শুটিংয়ের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিলেও ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার জন্য শুটিং পিছিয়ে যায়। গত ঈদ ঈদুল আজহায় মুক্তি পায় ‘প্রিয়তমা’। সিনেমাটি হিট হওয়ার পর নিজের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দেন সুপার স্টার শাকিব খান।
জানা গেছে, কয়েক মাস আগেও তার পারিশ্রমিক ছিল ৩৫ থেকে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে। কিন্তু ‘প্রিয়তমা’ সিনেমা মুক্তির পর পারিশ্রমিক ১ কোটি টাকা চাইছেন শাকিব খান। আর এ কারণেই আটকে যায় ‘নীল দরিয়া’ সিনেমা।
এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন বদিউল আলম খোকন। তিনি জানিয়েছেন, এখন শাকিব খানকে দিয়ে ‘নীল দরিয়া’ সিনেমা করতে হলে ৪০ লাখ টাকার সঙ্গে আরও ৬০ লাখ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেছেন তিনি। পারিশ্রমিক হিসেবে নেয়া ৪০ লাখ টাকা প্রযোজককে ফেরত দিয়েছেন সে।
বদিউল আলম বলেন, শাকিব খানকে আমরা টাকা দেয়ার সময় তার পারিশ্রমিক ছিল ৩৫ থেকে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে। আমরা ৪০ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। শুটিংয়ের জন্য ২০ জুলাই থেকে শিডিউল দিয়েছিলেন। সেভাবেই সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পর হঠাৎ করেই সে জানায়, ঈদুল আজহার জন্য ‘প্রিয়তমা’ করে তারপর ‘নীল দরিয়া’ করবেন। আমিও মেনে নেই। ঈদে ‘প্রিয়তমা’ হিট হয়। আর শাকিব খানও মত পাল্টায়, পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, আগের নির্ধারণ করা পারিশ্রমিকে এখন আর কাজ করতে চাইছেন না শাকিব খান। তাকে নিয়ে এখন কাজ করতে হলে ৪০ লাখের সঙ্গে আরও ৬০ লাখ টাকা দিতে হবে। মোট এক কোটি টাকা। কিন্তু আমরা তার সঙ্গে কথা চূড়ান্ত করার সময় যে পারিশ্রমিক ছিল, সেটি দিয়েই চূড়ান্ত করা হয়েছিল।
আফসোস করে এ পরিচালক বলেন, এখন নতুন কোনো সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হতে এক কোটি বা দুই কোটি টাকা সে নিতেই পারেন। এটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আমরা তো তাকে আগের পারিশ্রমিকে চূড়ান্ত করেছি। এখন সে আমাদের কাছে এটা দাবি করতে পারেন না। তার নৈতিকতার মধ্যে এটি পড়ে না। কমিটমেন্ট ঠিক না থাকলে হবে না তো। এটা খুব অন্যায়।
এ পরিচালক শাকিব খানের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, প্রিয়তমা সিনেমা যদি হিট না হতো তাহলে কি ৪০ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা প্রযোজককে সে ফেরত দিতেন?
নির্ধারিত পারিশ্রমিকে চূড়ান্ত হওয়ার পরেও ‘নীল দরিয়া’ নামের সিনেমায় কাজ করছেন না নায়ক শাকিব খান। শাকিবের দাবি করা বাড়তি পারিশ্রমিকে কাজটি করতে রাজি হননি প্রযোজক। ছয় মাস আগে পারিশ্রমিক বাবদ নেওয়া ৪০ লাখ টাকা প্রযোজককে ফেরত দিয়েছেন শাকিব খান।
Leave a Reply